স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন অকুতোভয়, আপসহীন। অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তার রাজনৈতিক মূল দর্শন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে তরুণ সমাজ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিবে, আজকের দিনের এই প্রত্যয়।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী পালন উপলক্ষে নিউইয়র্কের জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার একথা বলেন।
এসময় জাতির পিতা, বঙ্গমাতা ও তাদের শহীদ পরিবারসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দিবসটির কর্মসূচি।
দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। জাতির পিতার জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। সবশেষে ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জাতির পিতার শৈশব ও কৈশোরসহ তার পরিবারের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের নানাদিক তুলে ধরে বলেন, বাঙালি জাতির দারিদ্রতা ও বৈষম্য দূর করে সমতা প্রতিষ্ঠাই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্য। অন্যায়ের কাছে তিনি কখনোই মাথা নত করেন নি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
‘জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বের শোষিত-নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির অগ্রনায়ক। দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের প্রতি ছিল তার গভীর মমত্ববোধ। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে ভগ্নস্তূপ থেকে সোনার বাংলায় রূপান্তরের পেছনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অপরিসীম।’
তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, দারিদ্র্য বিমোচন, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্কসহ প্রতিটি সেক্টরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়।
পদ্মাসেতুসহ বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের উদাহরণ তুলে ধরে স্পিকার বলেন, জাতির সব উন্নয়নে জাতির পিতা আছেন ও চিরদিন থাকবেন। এসডিজি’র উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এর অনেকগুলো লক্ষ্য ও অভীষ্ট কথা জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে উল্লেখ করে গেছেন।
স্পিকার আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত হয়েছে। সুতরাং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির মধ্য দিয়ে এদেশের তরুণ প্রজন্ম প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতির পিতার আদর্শ ও দর্শনকে ধারণ করে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহদাত বার্ষিকীতে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্পিকার।