পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুটা অসুস্থ, সে কারণে তিনি ভারত সফরে যাননি: তথ্যমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুটা অসুস্থ, সে কারণে তিনি ভারত সফরে যাননি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে যেতে পারেননি, এ বিষয়ে আপনার মতামত কী- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী যখন বিদেশ যান, তখন সবসময় তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন্তু তার সফরসঙ্গী হন না। এখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেটা বলা হয়েছে সেটা হলো, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুটা অসুস্থ, সে কারণে তিনি যাননি। এটিই আমাকে ধরে নিতে হবে।

অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে গতকাল উনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) অফিস করলেন কীভাবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, কিছুটা অসুস্থ থাকলে অফিস করা যায়। কিন্তু এরকম হাই লেভেল ভিজিট করা কঠিন বা সম্ভব নয়। আমিও তো কিছুটা অসুস্থ থাকলেও অফিস করি। কিন্তু অসুস্থ অবস্থায় আমার পক্ষে কি বিদেশ সফর করা সম্ভব? সম্ভব না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অসুস্থ থাকার কারণে সফর নির্ধারিত থাকার পরও তিনি যাননি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতবার ভারত সফরে গেছেন ততবার খালি হাতে ফিরে এসেছেন’- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, গতকাল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে কথাটি বলেছেন সেটা বিএনপি ও বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য প্রযোজ্য। বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ভারত সফরে গিয়েছিলেন। সফর থেকে ফেরার পর তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হলো গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে কী কথা হয়েছে। তখন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘আল্লাহ আমি ওটা ভুলেই গিয়েছিলাম।’ যাদের নেত্রী ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানি ন্যায্য হিস্যার কথা বলতে ভুলে যান, তারা আবার এসব কথা বলেন। তারাই সবসময় ভারতকে সব দিয়েছেন, কিছু আনেনি।

তিনি বলেন, আমাদের সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার ও রক্তের অক্ষরে লেখা। এই সরকারের আমলেই আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে। আমাদের সরকার পারস্পরিক সস্পর্কের মাধ্যমে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করেছি।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের সরকার ভারত থেকে অনেক কিছু আদায় করেছে। প্রধানমন্ত্রী পর পর তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। এর মধ্যে প্রথমবার ভারত থেকে ২০ পণ্য বাদে সব পণ্যের ওপর ট্যারিফ সুবিধা আদায় করেছেন। ১৯৭৪ সালের মৈত্রী চুক্তি অনুযায়ী ছিটমহলগুলো আমাদের হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু বিএনপি কয়েক দফা ক্ষমতায় ছিল, এরশাদ ক্ষমতায় ছিলেন, তারপর আরও জরুরি সরকার ক্ষমতায় ছিল, কেউ ছিটমহলের অধিকার আদায় করতে বা আনতে পারেননি। সেটা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে আদায় করেছেন। ফলে ছিটমহলগুলো আমাদের অধিকারে এসেছে এবং আয়তন বেড়েছে। আমাদের সরকারই ভারতের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে সমুদ্রসীমা জয়লাভ করেছে। সুতরাং ভারতের কাছ থেকে যা কিছু আদায় আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে, শেখ হাসিনাই করেছেন। আর বিএনপি সব দিয়ে এসেছে। আর ভারতে গিয়ে বিএনপি দেশের ন্যায্য হিস্যার কথা, পাওনার কথা ভুলে যেতো। সুতরাং গতকালের বক্তব্য তার বেলায় ও তার নেত্রীর বেলায় প্রযোজ্য।

‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজকে বলেছেন আন্দোলনের মাধ্যমে এই অগণতান্ত্রিক সরকারকে নামাতে হবে।’ এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অগণতান্ত্রিকভাবে বন্দুকের নল থেকে যে দলের উৎপত্তি, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে বন্দুকের নল উচিয়ে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে। এভাবে যে দলের উৎপত্তি বা প্রতিষ্ঠা, সে দল যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন মানুষও হাসে, গাধাও হাসে। তো বিএনপি একটি অগণতান্ত্রিক দল। অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রই তাদের নেই। এক কলমের খোঁচায় কেউ নেতা হয়, আবার ঘুমের মধ্যে কেউ নেতা থেকে বাদ যায়।