চুনারুঘাটে ৮৯ মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা

সৌরভ শীল, চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ)

আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার প্রতিমা তৈরির কারিগরেরা। পূজার এই আনন্দ উপভোগ করতে পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট- বাজারে বিপনি বিতানগুলোতে কেনাকাটায় ভীর করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এদিকে খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি করছেন দুর্গাসহ নানা প্রতিমা। পূজা যতই ঘনিয়ে আসছে শিল্পীদের ব্যস্ততা ততটাই বাড়ছে। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও বাড়েনি প্রতিমার দাম।

আগামী পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সে হিসাবে ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবাবের দুর্গোৎসব। এবছর দেবী দুর্গা আসছেন গজে (হাতি) চড়ে, যাবেন নৌকায় চড়ে। দেবীর আগমনে বিশ্ব হবে শান্তিময়, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে উদয় হবে শুভ শক্তির এমনটাই প্রত্যাশা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।

উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিতে চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই প্রতিমা তৈরির শিল্পীদের। খড়, কাঠ, সুতা দিয়ে প্রতিমার কাঠামো তৈরি করছেন কেউবা নিপুণ হাতে ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী প্রতিমা। প্রতিমার কাঠামো তৈরি শেষে এখন চলছে প্রতিমা তৈরির মূল কাজ। সপ্তাহ খানেক পর শুরু হবে প্রতিমায় রঙের কাজ। পূজার আনন্দ উপভোগ করতে উপজেলার বিভিন্ন চা – বাগানের চা- শ্রমিকেরা কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিপনি বিতানগুলো ও কসমেটিকস দোকানে ভীর করছেন উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

পৌরশহরের নিরঞ্জন সিটির নিরঞ্জন বস্ত্রালয়ের প্রোপ্রাইটর প্রদীপ দাশ পদু, স্রুতি ফ্যাশনের প্রোপ্রাইটর পরেন্দ্র দাস সুমন বলেন, পূজার আগ মুহুর্তেই বিভিন্ন চা – বাগানের শ্রমিকেরা পূজার আনন্দ উপভোগ করে নিতে আগেভাগেই কেনাকাটা করছে । তাই বিকিকিনি চলছে মোটামুটি ভালোই। পূজা যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে বেচাকেনা। পূজাকে ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় কুমার পাল বলেন, এবছর উপজেলার ৮৯টি পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। তারমধ্যে সার্বজনীন ৭৪ টি, ব্যক্তিগত ১৫ টি পূজা মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। এবারের দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে পূজা মণ্ডপগুলোতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে। আশা করি, প্রত্যেক পূজা মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করবে স্বেচ্ছাসেবক, আনসার ও গ্রাম পুলিশ।

পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে চুনারুঘাট থানার (ওসি) মোঃ আলী আশরাফ বলেন, কোনও অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটার আগেই পুলিশের কাছে তথ্য থাকলে সেটি দমন করা সহজ হয়। এরপরও কোথাও যদি শারদীয় দুর্গোৎসব নিয়ে কোনও ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, সেটি আমরা সমাধান করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভোমিক বলেন, এ পূজাকে উৎসব মুখর করতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তৎপর থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। আশা করি নির্বিঘ্নে এ পূজা উদযাপন হবে।