কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম এই রায় দেন।
দণ্ডিত অপর আসামিরা হলেন- জিকে শামীমের সাত দেহরক্ষী মো. জাহিদুল ইসালাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন।
গত ২৮ আগস্ট এই মামলায় রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ওইদিনই আদালত রায়ের জন্য ২৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি একই আদালত আসামিদের চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচারকালে মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে মোট আদালত ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। এরপর আত্মপক্ষ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এবার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।
এই মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে র্যাব-১ এর উপ-পরিদর্শক চন্দ্র শেখর মল্লিক।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়, জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়েছে মর্মে আসামি আমিনুল ইসলাম কাগজপত্র দেখালেও তা যাচাইয়ের সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই তার অস্ত্রটি অবৈধ। তিনি ওই অবৈধ অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এস. এম. বিল্ডার্স কোম্পানিতে যোগদান করেন। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি আসামি জিকে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগদান করে কাজ করে আসছিলেন।
তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় ক্রয় করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন। তাই তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ১৯(ক)/২১/২৩ ধারার অভিযোগসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৮ ধারার অভিযোগ এনে পৃথক একটি চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
এছাড়া অন্য আসামিরা নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমান অর্থ উপার্জন করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ১৯(ঙ)/২১/২৩ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনে শামীমের বাড়ি ও অফিসে র্যাব অভিযান চালিয়ে আটটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলি, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর এবং নগদ প্রায় এক কোটি ৮১ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এবং মদ জব্দ করে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানিলন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা করা হয়।