প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। আজ বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে দুই পৃষ্ঠায় দেয়া এক বাণীতে শুভেচ্ছাবার্তা জ্ঞাপন করেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ১৯৪৭ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর দেশের এক ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে শেখ হাসিনার জন্ম। শৈশব থেকেই তিনি দেখেছেন তার পিতা বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব, সংগ্রামী জীবন এবং দেশ ও গণমানুষের রাজনীতি। যুক্ত হয়েছেন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন পাকিস্তান বিরােধী আন্দোলনসহ বাঙালির অধিকার আদায়ের সকল লড়াই-সংগ্রামে।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতার কন্যা হওয়া সত্ত্বেও তার চলার পথ কখনাে কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট কালরাতে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাবিরােধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। আপনজনদের হারানাের বেদনা বুকে ধারণ করে শেখ হাসিনাকে পরবর্তী ছয় বছর লন্ডন ও দিল্লীতে চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলাসহ বহুবার তার উপর হামলা হয়েছে। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতই প্রতিবার তাকে এসব বিপদ থেকে রক্ষা করেছে।

রাষ্ট্রপতি ড. আবদুল হামিদ বলেছেন, ১৯৮১১ সালে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতে তাকে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এটি ছিল আওয়ামী লীগের একটি সঠিক ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে স্বজন হারানাের বেদনা বুকে নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ‘৯০ এর গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচরের পতন হয়, বিজয় হয় গণতন্ত্রের। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভােটে জয়লাভ করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। এরপর ২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর নবম, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম এবং ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিনবার ক্ষমতায় আসে।

শেখ হাসিনা সরকারের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনার সাহসিকতা, বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগােপযােগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলেই বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু আজ উত্তাল পদ্মার বুকে জাতির গৌরবের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদর্প বিচরণ দেশের সম্মান ও মর্যাদাকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত ও নির্যাতিত লক্ষ লক্ষ রােহিঙ্গা জনগােষ্ঠীকে দেশে আশ্রয় দিয়ে তিনি বিশ্বমানবতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ জন্য তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিধায় ভূষিত হয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেছেন, জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে তারই যােগ্য উত্তরসুরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আজ বাঙালি জাতি এগিয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন সুখী-সমৃদ্ধ সােনার বাংলা গড়ার পথে। শেখ হাসিনা তার পিতার মতােই গণমানুষের নেতা। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, গতিশীল নেতৃত্ব, মানবিক মূল্যবােধ দিয়ে শুধু দেশেই নন, বহির্বিশ্বেও তিনি অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি ও অব্যাহত কল্যাণ কামনা করছি।