সব বাধা উপেক্ষা করে খুলনায় সমাবেশ হবে: ফখরুল

হরতাল কারফিউ কিছুই মানা হবে না, সব বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা খুলনায় জনসমাবেশে উপস্থিত হবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে পৃথক সংলাপ শেষে এ কথা জানান মির্জা ফখরুল।

খুলনায় বিএনপির জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ময়মনসিংহ একইভাবে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল, কিন্তু সমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। মানুষ ট্রলারে করে, রিকশায় করে, হেঁটে সমাবেশে জড়ো হয়েছে। তারা গাড়ি বন্ধ করুক আর যাই করুক গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলনে নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোনো কথা কি তারা রাখতে পেরেছেন? পারেননি, কারণ তারা বিশ্বাস করে যা বলতে পারবো না। উল্টোটা করে, সুতরাং আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।

‘বিএনপি আরেকটি ১/১১’র দুঃস্বপ্ন দেখছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, বিএনপি দিবাস্বপ্ন দেখে না। দেখি একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের, আমরা স্বপ্ন দেখি মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার, আমরা স্বপ্ন দেখি সত্যিকার অর্থে একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ অনির্বাচিত, অবৈধ, ভোটের অধিকার হরণকারী, লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি ঐকমত্য আন্দোলনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সবার সঙ্গে কথা বলছি। প্রথম দফা শেষ করে দ্বিতীয় দফায় এরই মধ্যে ১৪টি দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছি। এর অংশ হিসেবে আজ বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে কথা বলেছি।

‘তাদের সঙ্গে আলোচনায় আমরা যে দাবিগুলো উত্থাপন করেছি এর মধ্যে প্রথম যে দাবি রয়েছে- এ সংসদকে ভেঙে দিতে হবে, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর নির্বাচনকালীন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। সেই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশনের মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’

বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, দাবিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যেটা রয়েছে তাহলো আমাদের গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে বেশি ত্যাগী নেতা বেগম খালেদা জিয়া। যাকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাকে মুক্তি দিতে হবে। একই সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতাদের নামে যে মিথ্যা মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে।

‘আমরা বলেছি যে হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। সব জিনিসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। গত ১৫ বছর ধরে যে দুর্নীতি হয়েছে সেই দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আন্দোলন করছি আমরা।’