বাঙলা কলেজের এক ছাত্রীকে হেনস্তা অতঃপর জিম্মি করে তিন হাজার টাকা আদায় করে মুক্তি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) তিতুমীর ক্যাম্পাস কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ওই ছাত্রী শ্লীলতাহানির শিকার হন।
জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ-মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ইমাম হাসান শুভ। এছাড়াও তিনি বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি।
ভুক্তভোগী বাঙলা কলেজর অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী লাইছা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে এ তথ্য জানান। যোগাযোগ করা হলে লাইছা বলেন, গত ২০ অক্টোবর সরকারি তিতুমীর কলেজে ২য় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শেষে কিছুক্ষণ কলেজ মাঠে অবস্থান করেছিলাম। এ সময় তিতুমীর কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান শুভ মাঠের মধ্যে অকারণেই আমাদের উত্যক্ত করে। সে বাজে ভাষায় টিজ করতে থাকে, একাধিকবার কু-প্রস্তাব দেয়।
একাধিকবার লাঞ্চিতের শিকারের পর ধৈর্য ধরে রাখতে না পেরে প্রতিবাদ করেন বলে জানিয়ে ভুক্তোভোগী শিক্ষার্থী বলেন, একটা ছোট ইটের টুকরো তাদের বাইকের দিকে ছুঁড়ে মারি। এরপর তারা আমার বন্ধুদের মারতে থাকে। বিনা কারণে কেন মারছেন জিজ্ঞেসে করলে তারা বলে- আপনি অপরাধ করেছেন তাই আমরা আপনার বন্ধুকে মারছি। মারা থামাবো যদি বাইক ভাঙ্গার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেন। আমাকে বিরক্ত করছেন কেন আপনার এমন প্রশ্নে তারা বলেন, এটা বিরক্ত কোথায়? আপনাকে ভালো লেগেছে তাই প্রপস করেছি। যেকারোর যে কাউকে ভালো লাগতেই পারে।
এরপর বাইকের কোন ক্ষতি না হলেও তারা আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। দিতে রাজি না হওয়ায় এক পর্যায়ে ২০- ২৫ জন মিলেই আমাদের হেনস্তা করে। এ সময় আমি অজ্ঞান হয়ে মাঠের মধ্যে পড়ে যাই। এরপর আমার বান্ধবীরা পানি দিয়ে সেন্স ফেরানোর পরে তারা আবারো হেনস্তা করে। টাকা না দিলে আমার সহপাঠীদেরকে আবার মারধর করবে বলে জানায় শুভ। এক পর্যায়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।
এ বিষয়ে ইমাম হোসেন শুভর সাথে যোগোযোগ করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। এরপর এ বিষয়ে তিুতমীর কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিষয়টি আমি ফেসবুকে দেখেছি। শুভ তিতুমীরে কলেজ ছাত্রলীগের নেতা হলেও তাকে পোস্ট দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতার সুপারিশে। কমিটি হওয়ার পরে আমরা তার নাম দেখতে পেয়েছি। শুনেছি সে রাজনীতি করে বনানী থানায়। ক্যাম্পাসে তার কোন এক্টিভিটি নাই। কোন ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নে জুয়েল বলেন, ‘কালকে সভাপতিকে নিয়ে ভুক্তভোগী মেয়ের সঙ্গে কথা বলা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে ছাড় দেয়ার সুযোগ নাই।’
এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার ছুটিতে ছিলাম। রোববার ক্যাম্পাসে গিয়ে বিষয়টি দেখব। এই ধরনের ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। তার বিরুদ্ধে কলেজ প্রশাসন থেকে প্রাশাসনিক ব্যবস্থান নেয়া হবে।’