বিএনপিতে ৩০ ভাগ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আছে : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিএনপির মধ্যে অন্তত ৩০ ভাগ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আছে, এরা কমেনি। কোনো রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা হয়নি। কিন্তু অনেক মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছে। তারা পাকিস্তান জিন্দাবাদের মতো বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মল কমিটি আয়োজিত ৫১ তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকতার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করুন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মোজাম্মেল হক বলেন, আজ শুধু মাদ্রাসাগুলোতে নয়, কেজি স্কুলেও জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না। বাস্তবতা এটা। অথচ সরকারের আইন আছে। এখনো রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে জয় বাংলা স্লোগান, যা আইনে আছে এবং সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত তা খুব সযত্নে এড়িয়ে যান।

তিনি বলেন, আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করি, অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি, তাদেরও সাম্প্রদায়িকতা বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।

আলোচনায় শিক্ষাবিদ শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, আজ আনন্দের দিবস। আমরা একটা সংবিধান পেয়েছিলাম। আবার আমাদের একটা সংগ্রাম ছিল যে সংবিধান দিবস পালন করব। সরকার ঘোষণা দিয়েছে এই দিবসটি জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা হবে। আমাদের লড়াইটা সফল হলো। সে জন্য আমরা আজ আনন্দিত।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, অস্থিতিশীলতা বিএনপি অন্তর্ভুক্ত করেছে সংবিধানে। অস্থিতিশীলতাকে বিএনপি ও জামায়াত তাদের মূলমন্ত্র হিসেবে নিয়েছে। এই অস্থিতিশীলতার সর্বশেষ শিকার বিচারপতি মানিক। সংবিধানকে এই অস্থিতিশীলতা থেকে যদি মুক্ত করতে না পারি, তাহলে আমাদেরও আক্রান্ত হতে হবে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কিছু বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সংসদ সদস্য আরমা দত্ত বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন ধর্ম দিয়ে সম্পর্কে বণ্টন করা যায় না। এবং তারই প্রমাণ ছিল ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের দুঃখ কষ্ট কিছুটা লাঘব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দিনটিকে একটি পবিত্র দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছন। এর জন্য ধন্যবাদ জানাই।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শ্রেষ্ঠ অবদান হলো এ দেশ প্রতিষ্ঠা করা। আর দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ অবদান হলো এই রাষ্ট্রের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান তৈরি করে দেওয়া। মনোজগত থেকে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িকতার আধিপত্য যতদিন নির্মূল করতে না পারব, ততদিন সংবিধানের সব কিছু থাকলেও কোনো কাজ হবে না।