গতকাল সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার হারের ‘শক’টা কাটেনি এখনো। এরই মধ্যে আরও এক অঘটন দেখল কাতার বিশ্বকাপ। জাপান হারিয়ে দিল জার্মানিকে। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষের ঝলকে ২-১ গোলের দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে এশিয়ার দলটি।
কাগজে কলমে জার্মানি জাপান থেকে ঢের ভালো দল। র্যাঙ্কিংয়ে জাপানের অবস্থান ২৪, আর জার্মানির অবস্থান ১১তে। খেলোয়াড়দের নাম, ধারে-ভারে দুই দলের তুলনা চলে না। সেই জাপানই কি-না হারিয়ে বসল জার্মানিকে!
অথচ ম্যাচের শেষে জার্মানি থাকবে মুখ কালো করে থাকাদের দলে, সেটা মোটেও আঁচ করা যাচ্ছিল না। শুরুর দিকে একটা দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিল বটে জাপান, সেটা গোলে রূপ নেওয়ার আগেই লাইন্সম্যান উঁচিয়ে ধরেন অফসাইডের পতাকা। শুরুর আধঘণ্টায় গোলে শটও নিতে পারেনি এশিয়ার দলটি।
ওদিকে জার্মানি আক্রমণ সাজাচ্ছিল দারুণ পাসিং ফুটবলের পসরা সাজিয়ে। প্রথমার্ধে পাসই খেলেছে ৪২২টা। ৩১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ইলকায় গুন্দোয়ানের কল্যাণে গোলও পেয়ে গিয়েছিল। বিরতির একটু আগে কাই হ্যাভার্টজ যখন দ্বিতীয় বার বল জড়ালেন জাপানের জালে, তখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটা বুঝি জিতেই যাচ্ছে ৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা! তবে অফসাইডের খড়্গ এবার পথ আগলে দাঁড়ায় জার্মানদের। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যেতে হয় মুলারদের।
শুরুর অর্ধে জাপান নিজেদের ছায়া হয়ে ছিল অনেকটা। স্বরূপে ফিরল দ্বিতীয়ার্ধে। তবে জার্মানিও নিজেদের দ্বিতীয় গোলের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছিল। কিছুটা দুর্ভাগ্যও যেন পেয়ে বসেছিল দলটিকে, ৬০ মিনিটে গুন্দোয়ানের শট প্রতিহত হয় ক্রসবারে।
বারদুয়েক জাপান বেঁচে গেছে ভাগ্যের জোরে। সেই সৌভাগ্যটাকে জাপানিরা কাজে লাগাল ম্যাচের শেষ দিকে। শুরুটা হলো রিতসু দোয়ানের গোল দিয়ে। তাকুমি মিনামিনোর শটটা ঠেকিয়ে দিলেও আলগা বলে দোয়ানের শটটা ঠেকাতে পারেননি ম্যানুয়েল নয়্যার। ১-১ সমতা ফিরিয়ে তখন রক্তের গন্ধ পেয়ে বসেছে জাপান।
জার্মানি আবারও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল মিনিট দুই পরেই। কিন্তু জশুয়া কিমিখের সেই কর্নারে ফাঁকায় থেকেও হেডারটা লক্ষ্যে রাখতে পারেননি গুন্দোয়ান। জার্মানি তাদের সুযোগ কাজে লাগায়নি, মিনিট পাঁচেক পর নিজেদের সুযোগটা ঠিকই কাজে লাগিয়েছে জাপান। কউ ইতাকুরার বাড়ানো লং বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন তাকুমা আসানো। দারুণ এক ফার্স্ট টাচে ছিটকে দেন ডিফেন্ডার নিকো শ্লটারবেককে, এরপর বক্সে ঢুকে দুরূহ এক কোণ থেকে করে বসেন গোল। জার্মানির হারটা নিশ্চিত হয়ে গেছে তখনই।
জার্মানরা অবশ্য হার তখনই মেনে নেয়নি। একটা গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টাই করেছে। শেষ মুহূর্তে ম্যানুয়েল নয়্যারও উঠে এসেছিলেন আক্রমণে। তবে লাভ হয়নি। শেষমেশ শেষ হাসি হেসেছে জাপানই। বিশ্বকাপ তাতে পেয়ে গেছে দ্বিতীয় অঘটনের দেখা।