রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরকে কেন্দ্র করে সেখানকার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। তবে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে জাপান। প্রধানমন্ত্রীও দেশটিতে সফরে যাবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলোর সহযোগিতা জোটের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দি‌তে ঢাকায় আসা শ্রীলঙ্কা, মরিশাস, তানজানিয়া ও জাপানের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

ড. মোমেন বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে যাবেন। তাদের একটু ঝামেলাও আছে। কারণ জাপান সরকারের বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা টালমাটাল। তাদের তিনজন মন্ত্রী সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। কিন্তু আমাদের স্বাগত জানাতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।

জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মোমেন বলেন, তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আমরা চাই ফ্রি, ওপেন, ইনক্লুসিভ ও সিকিউর পিসফুল বে অফ বেঙ্গল। সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য। আমরা জাপানকে বলেছি, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন।

সম্প্রতি জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো আলোচনা হয়েছে কী না পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তা জানতে চাওয়া হয়। এ সময় তিনি বলেন, ওনাকে (রাষ্ট্রদূত) অনেকে জোর করেছেন কথাগুলো বলার জন্য। জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক বেশ গভীর। প্রধানমন্ত্রীর সফরে সম্পর্ক আরও গভীর হবে। সম্পর্ক কৌশলগত অবস্থায় আমরা উন্নীত করতে চাই।

শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। তবে কিছু কিছু বিষয় এখনও সমাধান হয়নি। আমরা ইউএস বাংলার বিমান চালু করেছি। কিন্তু আমাদের শিপিংটা এখনও যাচ্ছে না। আমরা শিপিংয়ের এগ্রিমেন্টটা যেন হয়, সেটা চাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের তৈরি পোশাক কলোম্বোতে গিয়ে অনেক শিপ হয়, তার ফলে আমাদের এক্সেসটা একটু দেরি হয়। আমরা চাই, জাহাজ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা যেন নোঙ্গর করে। তাছাড়াও কলম্বো পোর্ট আমাদের কিছুটা সস্তায় দেওয়া উচিত। তারপর আমরা ব্যবসা বাড়ানো নিয়ে আলাপ করেছি। তাদের সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে এবং তারা আমাদের সঙ্গে আছে।

মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মন্ত্রী জানান, মরিশাসের অনেক জমি আছে। আমরা কন্ট্যাক্ট ফার্মিং চাই। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার বাংলাদেশি ওখানে কাজ করেন। আমরা বলেছি, আমরা যোগাযোগব্যবস্থা ভালো চাই। যদি বিমান যোগাযোগ চালু করতে পারি, তাহলে আমাদের এগোনো সহজ হবে। জাতিসংঘ ইস্যুতে আলোচনাতো আছেই। তাদের আবার ব্লু-ইকোনিামিতে বেশ কিছু অর্জন আছে। আমাদের ওষুধ শিল্প চমৎকার পর্যায়ে রয়েছে। আমরা তাদের বলেছি, আমাদের এখান থেকে ওষুধ কারখানাগুলো আপনাদের ওখানে নিন, এতে তারা রাজি হয়েছে।

তানজানিয়ার ব্লু-ইকোনোমি ও ফিশারিজ মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা নিয়ে মোমেন বলেন, তানজানিয়া ব্লু-ইকোনোমিতে বেশ এগিয়ে। তাদের অনেক এক্সপার্টিজ আছে। তারা সেটা শেয়ার করতে রাজি। তারাও বলেছে, আপনাদের লোক এসে এখানে ক্ষেত-খামার ও কন্ট্যাক্ট ফার্মিং করতে পারে। তারা শিগগিরই আমাদের দেশে একটা ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল পাঠাতে চায়। তারাও আমাদের ওষুধ কোম্পানিগুলো নিতে চায়। তারাও চায় তাদের দেশে গিয়ে আমরাও কিছু বিনিয়োগ করি।