দ্বিতীয় ধাপে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রী এসব মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন।
প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে উদ্বোধন হওয়া মসজিদগুলো হচ্ছে-
ভাঙা, ফরিদপুর; সদর উপজেলা, শেরপুর; নগরকান্দা, ফরিদপুর; জেলা সদর, জামালপুর; কাপাসিয়া, গাজীপুর; বকশীগঞ্জ, জামালপুর; সদর উপজেলা, গোপালগঞ্জ; মাদারগঞ্জ, জামালপুর; সদর উপজেলা, কিশোরগঞ্জ; মেলান্দহ, জামালপুর; কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ; সরিষাবাড়ী, জামালপুর; ঘিওর, মানিকগঞ্জ; লালমোহন, ভোলা; সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ; তজুমদ্দিন, ভোলা; সদর উপজেলা, নরসিংদী; জেলা সদর, পিরোজপুর; মনোহরদী, নরসিংদী; সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া; গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী; কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া; জেলা সদর, শরিয়তপুর; সদর উপজেলা, খাগড়াছড়ি; ভেদরগঞ্জ, শরিয়তপুর; মানিকছড়ি, খাগড়াছড়ি; রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রাজশাহী; চান্দিনা, কুমিল্লা; সদর উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ; চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা; ধুনট, বগুড়া; রুপসা, খুলনা; নন্দিগ্রাম, বগুড়া; নিয়ামতপুর, নওগাঁ; খোকসা, কুষ্টিয়া; ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া; বড়াইগ্রাম, নাটোর; জেলা সদর, মেহেরপুর; ভাঙ্গুড়া, পাবনা; গাংনী, মেহেরপুর; সুজানগর, পাবনা; দেবহাটা, সাতক্ষীরা; কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ; গোয়াইনঘাট, সিলেট; গংগাচড়া, রংপুর; জেলা সদর, সুনামগঞ্জ; কাউনিয়া, রংপুর; জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ; সদর উপজেলা, ঠাকুরগাঁও এবং চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ মডেল মসজিদ।
দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২০২১ সালের ১০ জুন প্রথম ধাপে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে নির্মাণকাজ চলছে আরও ২৮৬টির। এর মধ্যে চলতি মাসে ৫০টি উদ্বোধন শেষে ফেব্রুয়ারিতে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।
সরকারি অর্থায়নে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। শুধু নামাজ আদায় নয়, এসব মসজিদ হবে গবেষণা ইসলামি সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সুবিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষদের আলাদা ওজু এবং নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কুরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মরদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা ও গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে।
মডেল মসজিদগুলোতে দ্বীনি দাওয়াত কার্যক্রম ও ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিকব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
৫৬০টি মডেল মসজিদে সারাদেশে প্রতিদিন ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
লাইব্রেরি সুবিধার আওতায় প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার ৮০০ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সবসময় দোয়া, মোনাজাতসহ তসবিহ পড়তে পারবেন।
মসজিদগুলো থেকে প্রতি বছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থা থাকবে। আরও থাকবে- ইসলামিক নানা বিষয়সহ প্রতিবছর এক লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। দুই হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে প্রকল্পের আওতায়। কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র হজ পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকবে।
৪০ শতাংশ জায়গার ওপর তিন ক্যাটাগরিতে মসজিদগুলো নির্মিত হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে ৪ তলা, উপজেলার জন্য ৩ তলা ও উপকূলীয় এলাকায় ৪ তলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নিচ তলা ফাঁকা থাকবে।
উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রাজশাহী, শরিয়তপুর জেলা সদর মসজিদ ও কুমিল্লার চৌদ্দ গ্রাম উপজেলা মসজিদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মডেল মসজিদের ইমাম, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ উপলক্ষ্যে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান।
গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।