‘প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজগুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো আমাদের লক্ষ্য’

রাকিব মোরতাজা, স্টাফ রিপোর্টার

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের শিল্প ও বাণিজ্য-বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান দেশের শিল্পখাতে এক অনন্য নাম। তিনি দেশের রপ্তানি শিল্পের অন্যতম প্রতিষ্ঠান স্টার্লিং গ্রুপের চেয়ারম্যান। সিদ্দিকুর রহমান তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ এর পরিচালক হিসেবেও রয়েছেন।

সিদ্দিকুর রহমানের জন্ম ১ জুলাই ১৯৫৫ সালে বরগুনা জেলায় । তার বাবা মরহুম আবদুল হামিদ হাওলাদার। সিদ্দিকুর রহমান প্রথমে স্টার্লিং গার্মেন্টস লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে তিনি স্টার্লিং অ্যাপেরেলস লিমিটেড, ইউনিকর্ন সোয়েটারস লিমিটেড, স্টার্লিং ডেনিমস লিমিটেড, স্টার্লিং ক্রিয়েশনস লিমিটেড, স্টার্লিং লন্ড্রি লিমিটেড, ব্যান্ডো ডিজাইন লিমিটেড, লায়লা স্টাইলস লিমিটেডের মতো আরও ‘স্টার্লিং গ্রুপ’ এর অধীনে সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ঢাকা ক্লাব লিমিটেড, উত্তরা ক্লাব লিমিটেড, আর্মি গল্ফ ক্লাব লিমিটেড, অল কমিউনিটি ক্লাব লিমিটেড, বাংলাদেশ ক্লাব লিমিটেড, ঢাকা বোট ক্লাব লি., অ্যাপারেল ক্লাব লিমিটেড এবং বনানী ক্লাব লিমিটেডের সদস্য। বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউএফটি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য।

সভাপতি হওয়ার আগে তিনি বিজিএমইএর সহসভাপতি (অর্থ) এবং দ্বিতীয় সহসভাপতি পদে ২০১০-২০১১ মেয়াদে এবং ২০১২-২০১৩ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ বিমানের সাবেক পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য-বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান একই সাথে আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য-বিষয়ক উপ কমিটি সদস্য সচিব। শীঘ্রই পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সবগুলো উপকমিটি।  আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য-বিষয়ক উপকমিটি নিয়ে তিনি কথা বলেন পলিটিক্স নিউজের সঙ্গে।

পলিটিক্স নিউজ: আওয়ামী লীগের শিল্প বিষয়ক উপকমিটি কবে নাগাত হতে পারে এবং কতজন বিশিষ্ট হবে?

সিদ্দিকুর রহমান: আমাদের শিল্প বিষয়ক উপ কমিটি খুব তাড়াতাড়ি হবে এবং কমিটির সদস্য ৫০ থেকে ৫৫ জনের হতে পারে। দল থেকে যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী আমাদের কমিটি হবে।

পলিটিক্স নিউজ: শিল্প বিষয়ক উপ কমিটিতে কাদের রাখা হবে?

সিদ্দিকুর রহমান: আমাদের এই উপকমিটিতে যারা শিল্প বাণিজ্যের সাথে জড়িত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বিভিন্ন জায়গায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তাদেরকে আমরা প্রাধান্য দেব। সারাদেশের বিভাগীয় শহরের প্রতিটি চেম্বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে আমরা লোক নিব। তারপরও অন্য জায়গা থেকে যদি লোক আসতে চায় তারা যদি আমাদের কাজে লাগে তাহলে তাদের রাখবো। কোন দেখানো কমিটি আমরা করবো না। আমরা করবো কাজের কমিটি।

পলিটিক্স নিউজ: ওবায়দুল কাদের বলেছেন সকল উপ কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০০ জনের মধ্যে রাখতে। আপনারা কি এই চাপ সামলাতে পারবেন?

সিদ্দিকুর রহমান: এটা আমাদের জন্য কোন চাপ নয়। দলের জন্য যেটা মঙ্গল হবে, দলের উপর থেকে যে নির্দেশনা আসবে, ঠিক সেই ভাবে আমরা কাজ করবো। কোন বিতর্কিত ব্যক্তি বা ব্যবসার সাথে জড়িত নয় এমন কাউকে নেওয়া হবে না ।

পলিটিক্স নিউজ: শিল্প বাণিজ্য উপকমিটি থেকে কি আগামী নির্বাচনের ইশতেহারে কোন প্রস্তাব দিবেন?

সিদ্দিকুর রহমান: আমরা আমাদের জাতীয় সম্মেলনে একটি ইশতেহার দিয়েছি। এই ইশতিহারের বাহিরে কিছু হবে না। হয়তো কিছু সংযোজন হবে, না হয় বিয়োজন হবে। আমাদের দলের ইশতেহার মোটামুটি রেডি আছে। সামনের দিনের উপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।

পলিটিক্স নিউজ: যে সকল শিল্পপতি কোন রাজনৈতিক দলে নেই, তাদের দলে আনার কোন উদ্যোগ নিবেন কিনা?

সিদ্দিকুর রহমান: আমাদের দল থেকে সারাদেশেই সদস্য নেয়া হয়। এটা উপ কমিটির কাজ নয়। শিল্পপতিদের আওয়ামী লীগ করতে হবে এমন কোন কথা নেই। যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মানবে, যে শেখ হাসিনাকে মানবে,আওয়ামী লীগকে ভালোবাসবে সে অটোমেটিক দলে আসবে। আমরা জোর করে কাউকে দলে নিয়ে আসবো না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। তার দল আওয়ামী লীগ। সেই জায়গায় আমাদের কাউকে জোর করে দলে আনার প্রয়োজন নেই।

পলিটিক্স নিউজ: বিজ্ঞান উপকমিটির মতো আপনারাও কি জেলা কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকদের এক ছাতার নিচে আনবেন?

সিদ্দিকুর রহমান: একেকজনের চিন্তা ভাবনা একেক রকম। সবার কাজ করার পলিসি একরকম হয় না। যাই করি দলের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করব তাই করবো।

পলিটিক্স নিউজ: শিল্প বাণিজ্য উপ কমিটি নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কি?

সিদ্দিকুর রহমান: আগামী বছর আমাদের জাতীয় নির্বাচন।এ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে ডেভলপমেন্টের কাজ করবো। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরিবের জন্য অত্যন্ত দয়ালু একজন মানুষ। এজন্য তাকে মাদার অফ হিউম্যানিটি বলা হয়। আমাদের নিজেদের নানা সমস্যা থাকার পরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার খাতিরে রোহিঙ্গাদের জায়গা দিয়েছেন। দেশের প্রতিটি মানুষকে গৃহ দেওয়ার জন্য তিনি কাজ করছেন।দেশে পদ্মা ব্রিজ, মেট্রো রেল,ট্যানেল হয়েছে। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ রয়েছে এখন আমাদের দেশে। কিছু জিনিসের দাম বেড়েছে। সেটা আন্তর্জাতিকভাবেই বেড়েছে। আমাদের আন্তর্জাতিক মার্কেটের সাথে তাল মিলিয়েই চলতে হবে। শিল্প বাণিজ্য উপ কমিটি হিসেবে আমাদের কাজ হল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।