জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি অস্বাভাবিক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি অনিরাপদ দেশ। দেশে মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। সড়কে, কর্ম ক্ষেত্রে এমনকি ঘরেও নিরাপত্তা নেই। সম্পদের নিরাপত্তা নেই, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই, মানুষের জীবনেরও নিরাপত্তা নেই। বেঁচে থাকার জন্যে মানুষ যেখানে নিরাপত্তা খোঁজে, সেখানেই করুণ মৃত্যু হচ্ছে মানুষের।
আজ দুপুরে রাজধানীর নর্থ সাউথ রোডে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্থ ভবন পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সাথে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের একথা বলেন।
এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ২০২২ সালের ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সিতাকুন্ডে বি এম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে ৫০ জন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ৬০ জন।
এ বছর গেলো ৪ মার্চ শনিবার, সিতাকুন্ডে সিমা অক্সিজেন লিমিটেড এর কারখানায় বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত হয়। আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। ৫ মার্চ রাজধানীর সাইন্সল্যাব এলাকায় একটি মার্কেটে বিস্ফোরণে ৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন। গতকাল, ৭ মার্চ বুধবার, সিদ্দিক বাজার নর্থ সাউথ রোডের ভবনে বিস্ফোরণে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অসংখ্য। এখন দুর্ঘটনা যেন স্বাভাবিক ঘটনা।
এ সময় গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আমরা জানতে পারলাম না কেন গেলো বছর চট্টগ্রামের সিতাকুন্ডে কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ হয়েছিলো। ধামাচাপা দেয়া হয়েছে, কারণ, সেখানে সরকার দলীয় লোকজন জড়িত। আমরা চাই সকল বিস্ফোরণের ঘটনায় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক এবং তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হোক। কাদের ব্যর্থতায় এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে দেশের মানুষ তা জানতে চায়।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ সময় আরো বলেন, চরম অব্যবস্থাপনার জন্য পুরো দেশ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ যেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। বিস্ফোরক সংরক্ষণ করতে হলে লাইসেন্স থাকতে হয়। লাইসেন্স পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। দুর্নীতি ও দলীয়করণের কারণে সব শর্ত পাশ কাটানো হচ্ছে। আমরা দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ সময় বিস্ফোরণে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। পাশাপাশি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিহত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কার ব্যর্থতায় এবং কেন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে দেশবাসী তা জানতে চায়। ভবিষ্যতে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর হবে না সরকারের কাছে আমরা এই নিশ্চয়তা চাই। একের পর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের জীবন যাচ্ছে। দুর্ঘটনায় হতাহতের দায় সরকার এড়াতে পারে না। নিরাপদ বাংলাদেশ সৃষ্টিতে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধে সরকারের সাফল্য নেই।
এসময় ঘটনা স্থানে উপস্থিত ছিলেন – জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক এ আদেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফারুক আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক -২ এম এ রাজ্জাক খান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম সহ জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ