জনমত যাচাইয়ের গণতান্ত্রিক পন্থা নির্বাচনকে বিএনপি ভয় পায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনে জনগণের সাড়া না পেয়ে বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য চিরাচরিত ভঙ্গিতে মিথ্যাচার করছে।
বিএনপি কখনোই নিজেদের জনগণের আয়নায় দেখতে প্রস্তুত নয়। এজন্য তারা সর্বদা জনমত যাচাইয়ের গণতান্ত্রিক পন্থা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়।
নির্বাচন আতঙ্ক থেকে তারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান এদেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে ছিল। জিয়াউর রহমান জাতিকে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিল এবং সামরিক আইন বহাল রেখে ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ/না ভোট, ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করেছিল। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে জিয়া পত্নী খালেদা জিয়া। যার ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিপ্রায়ে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল; বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসিয়ে মহান জাতীয় সংসদকে কলঙ্কিত করেছিল। আবার গণআন্দোলনের মুখে বিএনপি ‘জেনারেল ক্লোজেস অ্যাক্ট-১৮৯৭’ আইনের অধীনে ২০০৭ সালে তাদের একতরফা নির্বাচন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল। মির্জা ফখরুল এখন বলেন, আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিল, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। অথচ এরপর ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিই আসন পেয়েছিল মাত্র ২৯টি। জামানত বাজেয়াপ্তের বিষয়টি এরকম রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া বিএনপির ক্ষেত্রেই মানায়। আগামীতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই বুঝা যাবে কাদের জামানত থাকবে আর কাদের থাকবে না। বিএনপির প্রতি আহ্বান থাকবে, নিজেদের সক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য তারা যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।
তিনি আরও বলেন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণে আওয়ামী লীগ সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। আওয়ামী লীগ বিরোধী চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তিই এদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পরিচর্যা করে আসছে। যার গোড়াপত্তন হয়েছিল সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। বিএনপিই এদেশের সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তার ধারাবাহিকতায় আমরা দেখেছি, বিএনপি ও তার দোসররা সর্বদা সুপরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অকথ্য ও বর্বরোচিত নির্যাতন চালিয়েছিল বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী। ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ওপরে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এ সন্ত্রাসের বিবরণী সুস্পষ্টভাবে উঠে আসে। তাতে দেখা যায় ২৭ জন এমপি, মন্ত্রীসহ বিএনপির প্রথম সারির নেতারা এ সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিল। অতীত ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নির্বাচনের আগে বিএনপি সর্বদা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার মাধ্যমে বিভাজনের রাজনীতি শুরু করে। সব অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ।