তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আসলে বিএনপি নেতারা চায় না যে বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাক। কারণ এটি যদি চাইত তারা আদালতে গিয়ে বড়বড় আইনজীবী দিয়ে মামলা লড়ত। তারা কিন্তু মামলা লড়ে না। বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের মাতব্বরিটা আর থাকে না। সেজন্য তারা চান না যে বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাক।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতির পিতার ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা কিছুদিন আগে বলেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়া এমন অসুস্থ যে তাকে যদি বিদেশ নেওয়া না হয় উনি মারা যাবেন। তাদের কথায় মনে হচ্ছিল, তারা চাচ্ছিল বেগম খালেদা জিয়া মারা যাক। পরে উনি বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসায় ভালো হয়ে গেলেন।’
মির্জা ফখরুল সাহেবদের বক্তব্য শুনলে মনে হবে, দেশে গত ১৪ বছরে কিছু হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গিয়ে জনসভা করে, আর বলে দেশে কিছু (উন্নয়ন) হয়নি। ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়েও বলে দেশে কিছু হয় নাই।’
‘ফখরুল সাহেবদের বলি একটু পেছন ফিরে তাকান। আপনারা দেশকে কী উপহার দিয়েছিলেন? দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, পাঁচশ’ জায়গায় একযোগে বোমা, শায়খ আব্দুর রহমান আর বাংলা ভাই। আর হাওয়া ভবন বানিয়ে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করেছেন। আমোদ-ফুর্তি করার জন্য আবার খোয়াব ভবনও বানিয়েছিলেন। আর আপনারা সারাদেশে খাম্বা বসিয়েছিলেন তবে বিদ্যুৎ দিতে পারেননি। শেখ হাসিনা আজকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছেন।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতির জবাবে তিনি বলেন, ‘আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র দেশে সড়কের যে উন্নয়ন করেছে, সেই মন্ত্রণালয় হচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, যার মন্ত্রী আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজকের পদ্মা সেতু সেই মন্ত্রণালয়ের অধীনেই বাস্তবায়িত হয়েছে। আজকের যে কর্ণফুলী টানেল, যে মেট্রোরেল সেটিও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে হয়েছে। তিনি (ওবায়দুল কাদের) একজন সফল মন্ত্রী। বিএনপি এখন তার পদত্যাগ দাবি করে। আসলে মির্জা ফখরুল সাহেবের পদত্যাগ করা উচিত।’
‘এখন কোনো ইস্যু নেই। বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ইস্যু হালে পানি পায়নি। ১০ ডিসেম্বর বড় একটা অশ্ব ডিম পেড়েছিল। তাদের আন্দোলনে তাদের নেতা-কর্মীরাও সাড়া দেয়নি। এখন কোনো ইস্যু নেই, তারা এখন রোড অ্যাক্সিডেন্ট নিয়ে মেতে আছে।’
দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি প্রসঙ্গে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান আজকে বাংলাদেশ হতে চায়, আর এখানেই বঙ্গবন্ধুর দেশ রচনার সফলতা, জননেত্রী শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার সফলতা। আজকে সমগ্র পৃথিবী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করছে।’
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ। সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।