গত ২০ বছর ধরে তুরস্ক শাসন করে আসা প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানই পুনরায় নির্বাচিত হয়ে দেশটির মসনদে বসছেন। রোববার অনুষ্ঠিত রান-অফ নির্বাচনে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে।
আনাদোলু বলছে, ৯৭ শতাংশ ব্যালট বাক্স গণনা সম্পন্ন হয়েছে। এই গণনায় প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ৫২ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলু পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ৯ বছর প্রেসিডেন্ট আর ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করা এরদোয়ানের নেতৃত্বে ক্রমাগত কর্তৃত্ববাদী শাসনের পথে হাঁটা তুরস্কে স্মরণকালের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এরদোয়ানের পেশীবহুল পররাষ্ট্র নীতি আর অপ্রচলিত উপায়ে দেশের অর্থনীতি পরিচালনার ফলে রেকর্ড মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।
এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ভোটে এরদোয়ানের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল তিন মাস আগে দেশটিতে আঘাত হানা স্মরণকালের ভয়াবহ এক ভূমিকম্প। ওই ভূমিকম্পে অর্ধ-লাখের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ভূমিকম্পের পর উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে দেশ ও বিদেশি তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হয় এরদোয়ান নেতৃত্বাধীন সরকারকে।
চলমান এই পরিস্থিতির মাঝে গত ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে এরদোয়ানের সাথে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলুর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়।
বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে তুরস্কের উচ্চ নির্বাচন বোর্ডের প্রধান আহমেদ ইয়ানার এক সম্মেলনে নির্বাচনের ফল প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বলেন, রোববারের ভোটে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলুর চেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। প্রাথমিকভাবে ৯৭ শতাংশ ব্যালট বাক্সের ভোট গণনায় এরদোয়ান ৫২ দশমিক ১ শতাংশ এবং কিলিচদারোগলু ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন।
এরদোয়ান নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন একে পার্টির মুখপাত্র ওমের সেলিক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান শক্ত সমর্থন ধরে নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে, নির্বাচনী ফলে এরদোয়ানের জয় নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে ক্ষমতাসীন একে পার্টির কর্মী-সমর্থকরা তুরস্কজুড়ে আনন্দ মিছিল শুরু করেছেন। রয়টার্স বলছে, সমর্থকরা তার ইস্তাম্বুলের বাসভবনে জড়ো হয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিচ্ছেন। ২৮ বছর বয়সী একে পার্টির সমর্থক নিসা নামের এক তরুণী বলেন, আমরা আশা করছি সবকিছু ভালো হবে।
ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা এবং বৈদেশিক নীতিতে ধুঁকতে থাকা সাড়ে ৮ কোটি মানুষের এই দেশটির নির্বাচনে এরদোয়ানের পুনরায় জয় লাভ তার অপরাজেয় ভাবমূর্তিকে আরও দৃঢ় করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।