জামায়াত কীভাবে সমাবেশের অনুমতি পেল, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন না থাকা সত্ত্বেও কেন তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই বলতে পারবে।

রোববার (১১ জুন) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে ল রিপোর্টাস ফোরাম (এলআরএফ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিএনপির শাসনামলে যখন বিভিন্ন উপনির্বাচনে কারচুপি হয়, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্ট তৈরি হয়। হাইকোর্টে যখন এটাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়, তখন সেখান থেকে রায় দেওয়া হয় যে এটা সংবিধান সম্মত নয়। মামলাটি আপিল বিভাগে যাওয়ার পর সেখানেও একই রায় হয়। অর্থাৎ, সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং এমন সরকার গঠনের চিন্তা আওয়ামী লীগের নেই।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘তাদের অনেক নেতাকর্মীকে হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামেও নাকি মামলা রয়েছে।’ আমি বলতে চাই, হয়রানি নয় অপরাধ করেছে বলেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ২০০১ এ ক্ষমতায় আসার পর তারা আওয়ামী কর্মীদের ওপর যে অত্যাচার চালিয়েছে, সেগুলো অপরাধের মধ্যেই পড়ে। তিনি বলেছেন, ‘অনেককে নাকি গুম করা হয়েছে।’ যারা গুম হয়েছে তাদের আত্মীয়রা এসে রিপোর্ট করুক, আমরা তদন্ত করব।

খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সংবিধানের ৬৬নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে নৈতিক স্খলনের দায়ে কোনো ব্যক্তির যদি দু বছরের বেশি দণ্ডাদেশ হয়, তাহলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ বিধায় বাড়িতে থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। তিনি যদি সুস্থ হয়ে ওঠেন, রাজনীতি করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। তাহলে প্রথমে দায়িত্ব হচ্ছে দণ্ডিত সাজা আগে ভোগ করা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে তিনটি দল রয়েছে। এক দল চায় আইনটি বাতিল হোক, আরেক দল চায় সংশোধন করা হোক, যাদের সংখ্যা বেশি। আরেক দল চায়, যেভাবে আছে থাকুক। বিশ্বের অন্যান্য দেশ কীভাবে এই আইন পরিচালনা ও সংশোধন করে সেগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এটা যেন হয়রানিমূলক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা না হয় সেটা নিশ্চিত করতে। শুধু সাংবাদিক নয়, সাধারণ মানুষের মনেও যেন এই আইন নিয়ে কোনো ভয় কাজ না করে,সেটাও আমরা বাস্তবায়ন করব।

ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ সরোয়ার হোসেন ভূঁঞার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আইন সচিব গোলাম সারোয়ার ও যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, ফোরামের সাবেক সভাপতি এম বদিউজ জামান ও ওয়াকিল আহমেদ হিরণ, সহসভাপতি দিদারুল আলম দিদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।