প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে সহ্য করতে পারেন না বলেই নেতাকর্মীদের কারাগারে রেখেছেন: রিজভী

বিএনপিকে প্রধানমন্ত্রী সহ্য করতে পারেন না বলেই নেতাকর্মীদের কারাগারে রেখেছেন এমন মন্তব্য করে বিএন‌পির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১০ হাজার টাকার জন্য কৃষক যান জেলে। আর নিয়ম বহির্ভূত যে ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে সে শেখ হাসিনার পাশে এটাই হচ্ছে তার সুশাসন। এ কারণেই শেখ হাসিনা তার স্বৈরাচারী শাসন টিকিয়ে রাখতে চায়। এ কারণে তিনি গণতন্ত্র বিরোধী দল বিএনপিকে সহ্য করতে পারেন না। এ কারণেই হাবিবুর রশিদ হাবিব, আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, হাবিবুন নবী খান সোহেল ও সাইফুল ইসলাম নিরবরা আজ কারাগারে।

শনিবার (৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হাবিবুর রশিদ হাবিব মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে ‘আপসহীন দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান’এর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব এর বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসনের আবহাওয়া তৈরি করতে সর্বশেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করতে হবে ব‌লে মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সবাইকে আহ্বান করছি আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করবো। কিন্তু আমাদের গায়ে যদি লাঠির আঘাত পড়তে থাকে তাহলে কতদিন শান্তিপূর্ণ থাকবো। প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ একসঙ্গে চালাতে হবে। তা না হলে আরও অনেক হাবিবুর রশিদ হাবিবদের কারাগার যেতে হবে প্রতিকার পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, কারণ হাইকোর্ট আওয়ামী লীগ, পুলিশ আওয়ামী লীগ, প্রশাসন এর ডিসি এসপিরা ছাত্রলীগ। এরকম একটা পরিবেশে মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো ন্যায় বিচার নেই। মানুষ আদালতে যায় প্রতিকার পাওয়ার জন্য সেটাও নেই।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুদিন ধরেই বলছেন তাকে নাকি কিছু রাজনৈতিক দল উৎখাতের চেষ্টা করছে। আমার কথা হচ্ছে রাজনৈতিক দল উৎখাতে চেষ্টা করবে কেন? আপনি (শেখ হাসিনা) আপনার সরকার উৎখাত হোক এটা তো জনগণ চাচ্ছেন। আর ক্ষমতায় আসা না আসা এটা কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে জনগণের ওপর। আপনি জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়েছেন, ভোটার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছেন। আপনার ক্ষমতা চলে যাক এটা কিন্তু জনগণ চায়।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ৭৮- ৭৯ সালে গণতন্ত্র নাকি ধ্বংস করা হয়েছে। ওনি নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমরা গণতন্ত্র, রাষ্ট্র, সরকার এর আভিধানিক অর্থ জানি। পলিটিক্যাল সায়েন্স ও ডিকশনারিতে এর অর্থ আছে। কিন্তু শেখ হাসিনার যে কথাবার্তা চিন্তা ধারা সেটা জানতে হলে শেখ হাসিনার জন্য আলাদা একটা ডিকশনারি বা পলিটিকাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্ট খুলতে হবে।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের নমুনা হলো কক্সবাজারের কুখ্যাত বিখ্যাত ব্যক্তি বদি সে প্রকাশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান নুর আলমকে পিস্তল দেখিয়েছে যে, কেন সে আবার উপজেলা নির্বাচন করবে। সরিষাবাড়ীতে আওয়ামী লীগের যিনি প্রার্থী তিনি বলেছেন তার বিরুদ্ধে কোন প্রার্থী দাঁড়াতে পারবে না। বরিশালের হাসনাত আব্দুল্লাহ তার মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যে থাকবে তার নাকি হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে। এ হচ্ছে শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের নমুনা। এ গণতন্ত্র তিনি চালু করেছেন যখনই ক্ষমতা এসেছেন। এ গণতন্ত্র তিনি চালু করেছেন ৫ জানুয়ারি ২০১৪, ২০১৮ এবং ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে। তার মত অনুযায়ী গণতন্ত্রের ব্যাখ্যা দিতে হবে। বাংলাদেশে জনগণের অধিকার বলে যে কথাটা আছে তিনি তা মুছে দিয়েছেন, নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন। কারণ তিনি যে দুঃশাসন চালাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে যেন কেউ টু শব্দ করতে না পারে।