দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের (সরকারিকরণ) দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন ফরিদপুর-১ আসনের (বোয়ালমারি-আলফাডাঙা-মধুখালী) গণমানুষের নেতা ঢাকা টাইমস সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।
শিক্ষকদের উদ্দেশে দোলন বলেন, ‘বিশ্বাস রাখুন, আমাদের শিক্ষকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পাশে দাঁড়াবেন। আপনাদের দাবির বিষয়ে তিনি অবশ্যই সমাধান দেবেন। আপনারা ক্লাসে ফিরে যেতে পারবেন। তিনি মানবতার মা। তিনি আপনাদের ফেরাবেন না।’
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে টানা নবম দিনের মতো অবস্থান করে লাগাতার কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। তাদের আন্দোলনস্থলে বুধবার দুপুরে উপস্থিত হয়ে সহানুভূতি প্রকাশ করেন কৃষক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলন।
ঢাকা টাইমস সম্পাদক সেখানে উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। বিশেষ করে আলফাডাঙা, মধুখালী, বোয়ালমারিসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের শিক্ষকেরা আরিফুর রহমান দোলনের কাছে তাদের কষ্টের কথা, বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন।
সংহতি প্রকাশ করে পাশে দাঁড়ানোর জন্য তারা আরিফুর রহমান দোলনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। তারা বলেন, ‘আপনিই (দোলন) একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আমাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।’
এসময় ফরিদপুর-১ আসনের গণমানুষের নেতা দোলন বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষকদের সম্মান দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা মানবতার মা মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষকদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন।’
‘প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এই কষ্টের কথা জানলে, সরকারি শিক্ষকদের সঙ্গে যে আকাশ-পাতাল বৈষম্যের কথা জানলে অবশ্যই তিনি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেবেন। আপানাদের দাবি মেনে নেবেন বলে আমার অটুট বিশ্বাস।’
ঢাকা টাইমস সম্পাদকের কাছে অভিযোগ করে এক নারী শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের স্কুলের কাছেই একটি সরকারি গার্লস স্কুল রয়েছে। সেখানকার শিক্ষকরা বেলা ১১টায় আসে দুপুর ১টায় চলে যায়। আর আমরা ১১টায় স্কুলে গিয়ে বের হই বিকাল ৫টায়। এর পরেও তাদের চেয়ে আমাদের বেতন কম, বোনাস কম, সব সুযোগ সুবিধা কম।’
আরিফুর রহমান দোলন শিক্ষকদের কথা শোনেন এবং যেকোনো সংকটে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বলেন, ‘শিক্ষার মেরুদণ্ড হচ্ছে শিক্ষক। সেই শিক্ষকের জীবনমান উন্নত না হলে তার ছাপ শিক্ষায়ও পড়তে পারে। শিক্ষকদের উন্নয়ন হলে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে আরও দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে দেশ।’
দোলন বলেন, ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শিক্ষকেরা সবসময় সামনের সারির যোদ্ধা হিসেবে কাজ করে থাকেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করে থাকেন।’
‘শিক্ষকদের জীবনমানের এই দুর্দশা, উন্নত জীবন বাধাগ্রসস্থ হওয়ার কথা যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানতে পারেন, তিনি অবশ্যই আপনাদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবেন।’
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ঢাকা টাইমস সম্পাদক দোলন বলেন, ‘বিশ্বাস রাখুন আমাদের শিক্ষকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী আপনাদের পাশে দাঁড়াবেন। আপনাদের দাবির বিষয়ে তিনি অবশ্যই সমাধান দেবেন। আপনারা ক্লাসে ফিরে যেতে পারবেন। তিনি মানবতার মা। তিনি আপনাদের ফেরাবেন না।’
‘আপনাদের আন্দোলন নিয়ে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। আপনাদের জন্য স্বজনরাও দুশ্চিন্তা করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়গুলো জানতে পারলে, তাঁর পক্ষ থেকে ঘোষণা আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আপনাদের দাবি দ্রুত মেনে নিয়ে সমস্যা সমাধানে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে দাবি জানাচ্ছি।’
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীকরণের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে কৃষক লীগের সাবেক এই সহ-সভাপতি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্মার্ট শিক্ষক দরকার। শিক্ষকরা ভালো থাকলে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ সহজ হবে।’
এসময় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. ইসরাফিল মোল্লা, ফরিদপুর অঞ্চল শাখার সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম মিয়া, মধুখালী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কবিরুল আলমসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তারা আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনের জনপ্রিয় নেতা আরিফুর রহমান দোলনের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের (সরকারিকরণ) দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের অভিযোগ, সরকারি স্কুলে তাদের সমকক্ষ শিক্ষকরা একই কাজ করে যে উৎসবভাতা, বাড়ি ভাড়াসহ আনুষাঙ্গিক বেতন-ভাতা পান, তার অর্ধেকও বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের দেওয়া হয় না।