তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গত শুক্রবারের প্রোগ্রামে গন্ডগোল কেন হলো না সেজন্য বিএনপি নেতাদের উপর চটে গিয়ে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নেতাদের ফোন করে নির্দেশ দিয়েছেন গাড়ি ভাংচুর, আগুন দেওয়া এবং পুলিশের উপর আক্রমণ করার জন্য। সেই প্রমাণ আমাদের হাতে আছে।’
রোববার (৩০ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর দোস্ত বিল্ডিং চত্বরে ‘বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি ও সহিংসতার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল’পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায়ের অডিও বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে, তিনি আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। আবার বলছেন- এটা একটু ভিডিও করে রাখেন, জায়গা মতো পাঠাতে হবে। অর্থাৎ তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠাতে হবে।’
ঢাকায় শনিবারের সংঘর্ষ নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গন্ডগোল করার উদ্দেশ্যেই বিএনপি পরদিন ঢাকা শহরের প্রবেশ মুখগুলোতে অবস্থান ধর্মঘট অর্থাৎ ঢাকা অবরুদ্ধ করার কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু ঢাকা শহরের প্রবেশ পথ বন্ধ করার অধিকার কোনো রাজনৈতিক দলের নাই।’
তিনি বলেন, সবাই সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে পারে, এবং তারা তা করছেও। সেখানে বাধা দেয়া হচ্ছেনা, বরং সহযোগিতা করা হয়েছে। কিন্তু ঢাকা শহরের প্রবেশ মুখ বন্ধ করে দেওয়ার অধিকার কাউকে সরকার দিতে পারেনা, সে কারণে সেটি সরকার অনুমতি দেয় নাই।
কেউ যাতে শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতি বিনষ্ট করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকার প্রবেশ মুখে সতর্ক পাহারায় ছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ওপর তারা আক্রমণ চালিয়েছে, পুলিশের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। শনিবার প্রথমার্ধে তারা সাতটি বাস জ্বালিয়েছে, রাতের বেলা আরো গাড়িতে আগুন দিয়েছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন এই সব গাড়ি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে এক একটি পরিবারকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, একটি পরিবারের স্বপ্নকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না।’
‘বিএনপি মহাসচিব মিথ্যাচার করছেন’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে তারা যে আগুন দিয়েছেন সেটি অস্বীকার করলেন। তার মতো জঘন্য মিথ্যাবাদী বাংলাদেশের কখনো জন্মগ্রহণ করে নাই। মিথ্যা বলায় যদি কেউ চ্যাম্পিয়ন তাহলে তিনি হবেন। যারা গাড়িতে আগুন দিয়েছেন সেগুলোর ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদেরকে গ্রেফতার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
নেতা-কর্মীদেরকে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে না আনা পর্যন্ত রাজপথে নেমেছি রাজপথেই থাকবো। আগুন সন্ত্রাসীদের আমরা এই দেশ থেকে বিতাড়িত করব। বিএনপি নির্বাচন চায় না, তারা চায় দেশে একটি গন্ডগোল পাকাতে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভন্ডুল করতে, সেটি আমরা হতে দিতে পারি না। তাই নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে পাড়ায়-মহল্লায়, গ্রামে-গঞ্জে, ওয়ার্ডে-ইউনিটে বিএনপির আগুন সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে হবে। তাদের এই অপরাজনীতি বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে হবে।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিতের সঞ্চালনায় সহসভাপতি আবুল কাশেম চিশতি, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, উত্তরজেলা যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল ইসলাম, ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা বাসন্তী প্রভা পালিত প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।