রাজধানীর শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতনের ঘটনায় অতিরিক্ত পাঁচ কর্মদিবস সময় পেয়েও তদন্ত শেষ করতে পারেনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তদন্ত কমিটি। সে কারণে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরও সাত কর্মদিবস সময় চেয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তদন্ত শেষ করতে কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিএমপি কমিশনারের কাছে আরও সাত দিনের সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির এক সদস্য এবং ডিএমপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত ডিএমপি কমিশনার সাত দিন সময় বাড়ানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন কি না তা জানা যায়নি।
গত (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে শাহবাগ থানায় নারী ঘটিত একটি ঘটনার জেরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে মারধর করেন রমনা বিভাগ তৎকালীন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ। এ ঘটনায় এসিডি হারুনকে প্রথমে প্রত্যাহার করে ডিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
এরপর ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলেই ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের নির্দেশে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। ডিএমপি সদর দপ্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) আবু ইউসুফকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন, রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (নিউমার্কেট জোন) শাহেন শাহ এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-মতিঝিল বিভাগ) মো. রফিকুল ইসলাম। তাদের দুই কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। তবে সে সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্ত কমিটি।
এরপর গত ১২ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও পাঁচ কর্মদিবস সময় চাওয়া হয়। পরে তাদের আবেদন মঞ্জুর করে আরও পাঁচ কার্যদিবস সময় বাড়ানো হয়। তবে এ সময়ের মধ্যেও তদন্ত কাজ শেষ করতে না পারায় ফের সাত কর্মদিবসের আবেদন করা হলো।
এদিকে, ছাত্রলীগের ওই দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় এডিসি হারুনকে প্রথমে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) বদলি আদেশ জারি করে ডিএমপি। তবে ওইদিন বিকেলেই পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সই করা এক আদেশে তাকে এপিবিএন-এ বদলি করা হয়। পরে তাকে রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হয়।
ঢাবি ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ডিএমপির ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিনের সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন এডিসি হারুন। ওই সময় এডিসি সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। এসময় তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাক-বিতণ্ডা হয়।
পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। এরপর অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়লে ওই দুজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।