বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে দেশের সাফল্য ও অর্জন তুলে ধরতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বৃদ্ধিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকার প্রশংসা করে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে।
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য এবং অভিন্ন মূল্যবোধের ক্ষেত্র আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক আরও গভীর করতে এখানকার প্রবাসীদের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি নিপীড়ন, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং ত্রিশ লাখ মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি সারাবিশ্বের কাছে সাহস, আত্মমর্যাদা ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
স্বাধীনতার পর দুর্ভিক্ষ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ থেকে আজকের বাংলাদেশে রূপান্তরের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা তখন তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি উদীয়মান অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। দারিদ্র্য হ্রাসসহ আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৩.২%, আর বর্তমানে আমাদের জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬.৮%।
ড. মোমেন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সময়কালে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বাংলাদেশকে উগ্রবাদ, জিহাদি এবং সন্ত্রাসের দেশে পরিণত করা হয়েছিল। সুখবর হলো সেই দিন এখন শেষ হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পর, সামরিক শাসন, কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন প্রণয়ন করে খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। তখন খুনিদের বিচার না করে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করে পুরস্কৃত করা হয়।
মোমেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ভূমিকা তুলে ধরে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এক কোটি ২০ লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্নভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, সেন্টার ফর এনআরবি এর চেয়ারপারসন এম এস শেকিল চৌধুরী, ইউ এস এম্বাসাডর অব পিস, ইউ এন অ্যান্ড এক্সপার্ট ডব্লিউএইচও ড. সিমা কারেতনয়া, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।