শেষ হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ

কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। রোববার সকাল ৮টা থেকে দেশজুড়ে ৪২ হাজার ১০৩টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ভোটগ্রহণ চলাকালে যশোর, লালমনিরহাট, বগুড়া, রাজধানীর হাজারীবাগসহ কিছু জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় শিশুসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম, জামালপুর, ফরিদপুরসহ আরও কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন।

এদিকে ময়মনসিংহ-১০ আসনে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারা ও ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগে প্রিসাইডিং অফিসারসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। একই অভিযোগে রাজবাড়ী-২ (পাংশা-বালিয়াকান্দি-কালুখালী) আসনের হাঁড়িভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মুহাম্মদ ফরিদ সেখকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঢাকায় ২৫ শতাংশ, চট্টগ্রামে ২৭ শতাংশ, খুলনায় ৩২ শতাংশ, সিলেটে ২২ শতাংশ, ময়মনসিংহে ২৯ শতাংশ, রাজশাহীতে ২৬ শতাংশ, রংপুরে ২৬ শতাংশ ও বরিশালে ৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে। আট বিভাগে গড়ে ২৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত (বিকেল ৩টা) ৭টি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে।

ইসির কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, সারা দেশে ৩৭টি অনিয়ম ও গোলযোগের ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে। জাল ভোটের অভিযোগে আটক করা হয়েছে ছয়জনকে। অনিয়মের কারণে বরগুনায় একজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ভোটের সার্বিক পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা। তবে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম বলে মনে করেছেন তারা।

সংসদ নির্বাচনে আজ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনে পরে ভোট নেওয়া হবে। এবার ভোট নেওয়া হয়েছে ব্যালট পেপারে।

নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন মোট ১৯৭১ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ জন ২৮টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী। বাকি ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা ২৬৬ জন। জাতীয় পাটির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জন ভোটের মাঠে আছেন।

নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ আর ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী ভোটার। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। সারা দেশে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১০৩টি, আর ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি।