আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ফলে এ নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি।

রোববার (৭ জানুয়ারি) দিনভর ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ শেষে রাতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে নৌকা প্রতীকের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের চিত্র উঠে আসে।

ইসি সচিব মো. আলমগীর রাত ৩টার দিকে বলেন, সোমবার (৮ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে দলভিত্তিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে একটি আসনে অর্থাৎ নওগাঁ-২ আসনে একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়েছে। বাকি আসনগুলোর মধ্যে কেবল ময়মনসিংহ-৩ ছাড়া সব আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। অনিয়ম-সংঘর্ষের ঘটনায় এক কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল হওয়ায় ময়মনসিংহের ওই আসনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা হয়নি।

ঘোষিত ফল অনুসারে, ২৯৮ আসনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন ৬১টি আসনে। ১১টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। আর একটি করে আসন পেয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

সরকার গঠন করতে জাতীয় সংসদের ১৫১টি আসন পেতে হয়। এক্ষেত্রে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। ফলে দলটিই টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করছে। সেক্ষেত্রে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

নির্বাচনে আসন জয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও দলগতভাবে বিজয়ী আওয়ামী লীগের পরে আছে জাতীয় পার্টি, সেক্ষেত্রে এবারও সংসদের বিরোধী দলের ভূমিকা নিতে যাচ্ছে তারা।

নির্বাচনে মোট এক হাজার ৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে ২৮টি রাজনৈতিক দল এক হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী দিয়েছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৭ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ঈগল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৮০ জন, আর ট্রাক প্রতীক নিয়ে প্রতদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৩৩ জন, যাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগেরই নেতা।

নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) ও গণতন্ত্রী পার্টি; এই ২৮টি দল প্রার্থী দেয়।

অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। তাদের প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬৫। জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন ২৬৪ জন। তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আম প্রতীকের ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের ৯৬ জন ও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নোঙ্গর প্রতীকের ৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএমসহ ২৩ দলের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি।