‘মাতাল’ ছাত্রলীগ নেতা ডালিম-শামিম-নবীনের তাণ্ডব, রড-চাপাতি দিয়ে হামলা

তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি

সরকারি তিতুমীর কলেজে মদ্যপ অবস্থায় ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম ডালিম ও শামীম মোল্লা এবং ত্রাণ ও দূর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক নীবন ইসলাম রাজের বিরুদ্ধে দেশীয় অস্ত্র রড-চাপাতি দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার সন্ধ্যায় কলেজের আক্কাসুর রহমান আঁখি হলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর জখম হয়ে রাফি আহমেদ নামের আরেক ছাত্রলীগ নেতা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত পাঁচজন। আহতরা হলেন- বনানী থানা ছাত্রলীগ সহ সভাপতি প্রান্ত চন্দ্র ধর, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ উপ-কৃষিবিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ওয়াহিদ, সিয়াম মাহমুদ ও ইমরান।

তিতুমীর কলেজ সূত্র জানিয়েছে, এদিন দুপুর থেকেই মদ্যপ অবস্থায় কলেজে বেপরোয়া চলাফেরা করে ডালিম। তার সঙ্গে ছিলেন শামিম। বিকালে কলেজের শাকিল চত্ত্বরে সিয়াম ও ইমরানকে কিল-ঘুষি মারে তারা। এরপর সন্ধ্যায় ডালিম, শামীম ও নীবন ফের হলের গেটের সামনে রড-চাপাতি দিয়ে রাফি আহমেদ, প্রান্ত চন্দ্র ধর ও ওয়াহিদের ওপর হামলা করে। এতে মাথা ফেটে রক্তাক্ত অবস্থায় রাফিকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী রাফি বলেন, আমরা দাঁড়িয়েছিলাম। শুধু শুধু আমাদের মেরেছে ডালিম ভাইয়েরা। রডের মধ্যে লোহার কিছু একটা লাগানো ছিল। সেটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মেরেছে। হাতে কামড় দিয়ে কেটে ফেলেছে।

আহত প্রান্ত বলেন, ডালিম আর শামিম মিলে হলের গেটের সামনে আমাদের ওপর অযথা আক্রমণ চালায়। হাত-পায়ে রড দিয়ে মারতে থাকে। মাথায় কিল-ঘুষি দেয়।

সিয়াম মাহমুদ বলেন, আমাদের জেলা সমিতির একটি অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মহোদয় এর আগমন উপলক্ষ্যে আমরা কয়েকজন শাকিল চত্ত্বরে অবস্থান নেই। তখন ডালিম সেখানে মদ্যপ অবস্থায় ক্ষিপ্ত ও অপ্রীতিকর আচরণ করছিলো। এক সময় আমাদের ওপর ডালিম আর শামিম হামলা করে।

এই ঘটনায় কোনো দায় নিতে চায় না কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মো. রিপন মিয়া। তিনি বলেন, যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকে তখন সে ছাত্রলীগ থাকে। কেউ যদি বউ বা চাচার মাথে মারামারি করে তখন সে ছাত্রলীগ থাকে না। আর সে তো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাকরি করে, তার ছাত্রত্ব নাই, সে ছাত্রলীগ কিভাবে করে?

হলের সামনে মারামারি করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে মসজিদেও মারামারি করতে পারে। সেই দায়িত্ব কি আমি নেব নাকি! সংগঠন চলার সময় কিছু ব্যত্যয় ঘটে কি না তখন আমার কাছে জানতে চাইবেন।

এই বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি মাত্রই জানলাম। এটি খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়াও একই দিনে, মধ্যপ অবস্থায় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাগরের বিরুদ্ধেও একাধিক ছাত্রকে ক্যাম্পাসের পেছনে গেইটে হামলার অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে মদ্যপানের পর বিল চাওয়ায় মধ্যরাতে বারে হামলা ও ভাঙচুর করেছিলো তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ওই ঘটনায় বনানী থানায় মামলা হয়। এতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ক্যাশ ভেঙে কয়েক লাখ টাকা ও ১২০ বোতল মদ লুটের অভিযোগ করা হয়।