সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যেন কথা বলতে না পারে সেজন্যই একের পর এক আইন: রিজভী

‘মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে সংসদে আইন আনা হবে’-আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সংসদে দেওয়া এমন বক্তব্যে আশঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এর মাধ্যমে নাগরিকদের ওপর নজরদারি আরও তীব্র হবে। তিনি বলেন, এটি সমগ্র জাতিকে পর্যবেক্ষণে রাখার এক নতুন কালো আইন প্রনয়ণের আলামত।

রিজিভী বলেন, মূলত বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ যেন কথা বলতে না পারে সেজন্যই একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ তৈরি করছে সরকার। সরকারের বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘দেশে মতপ্রকাশ বা বাকস্বাধীনতা প্রয়োগের জন্য অনেক মানুষকে মামলা ও জেল-জুলুম ভোগ করতে হয়েছে। এবার জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেবে। সরকারের বিরুদ্ধে কেউ সমালোচনা করতে পারবে না। নির্বাচনী ব্যবস্থা কলুষিত করে সরকার মানুষের ন্যুনতম অধিকার দিতে রাজি নয়। তাদের কাছে জনগণ নিতান্তই গৌণ, উপেক্ষিত তাচ্ছিল্যের একটি বিষয়।’

রিজভী আরও বলেন, ‘মানুষের নাভিশ্বাস দশার কথা বিবেচনা না করে সরকার আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করে যখন ইচ্ছা বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারবে সরকার। এ আইন অনুমোদন করিয়ে জনগণকে নিপীড়ন ও ফতুর করার নীতি গ্রহণ করেছে সরকার।’

তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। গ্যাস সংকট জিইয়ে রেখে এলএনজির ব্যবসার দ্বার খোলা হয়েছে। সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছেন। এটা স্পষ্ট যে, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের লোকসান আসলে সংশ্নিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বশীলদের অব্যবস্থাপনা, অবহেলা আর দুর্নীতির ফল। কিন্তু এর দায় মেটাতে হচ্ছে জনগণকে।’

রিজভী বলেন, ‘এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া’র ধাক্কায় মানুষের জীবন চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন শ্রমিক, কৃষক, চাকরিজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চিকিৎসা, লেখাপড়া, বিনোদন, কাপড়-চোপড় এমনকি খাওয়ার খরচ মেটাতে না পেরে অসীম হতাশায় দিন যাপন করছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করছেন।