গাছ লাগিয়ে ছাত্রলীগ বুকস অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখাবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
তিনি বলেছেন, আমরা আন্দোলন ও নির্বাচনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।
আমাদের সামনে লক্ষ্য একঘণ্টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃক্ষরোপণের রেকর্ড। যেটি আমরা ইতোমধ্যে নির্ধারণ করেছি। গিনেজ বুকস অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আমরা জায়গা করে নিতে চাই। জলবায়ু পরিবর্তনের আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভূমিকা পালন করতে চায়। আমরা বিশ্বাস করি এ বৃক্ষরোপণ অভিযানেও ছাত্রলীগ চ্যাম্পিয়ন থাকবে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) ভোর ৫টার দিকে ফেনী পৌরসভা চত্বরে জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত পথসভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, নিরক্ষরতা দূরীকরণে, মাদক, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছাত্রলীগ চ্যাম্পিয়ন থাকবে। আধুনিক, যুগোপযোগী, স্মার্ট ও শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্ররাজনীতি বিনির্মাণে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চ্যাম্পিয়ন থেকে ছাত্রসমাজকে পথ দেখাবে।
ফেনী জেলা ছাত্রলীগের প্রশংসা করে সাদ্দাম বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনেক ভুলভ্রান্তি, গ্রুপিংসহ নানা ধরনের নেতিবাচক বাস্তবতা রয়েছে। যেগুলোর কারণে আমাদের সংগঠনের যে শক্তি, ঐক্য ও দৃঢ়তা রয়েছে সেই ধাপগুলো অনেকসময় অতিক্রম করতে পারি না। এই নানামুখী নানা নেতিবাচকতার ভিড়ে আপনাদের এমন ঐক্য, দৃঢ়তা ও শৃঙ্খলা সত্যিই ইতিবাচকতার আলো দিয়ে সবাইকে পথ দেখাতে পারে। এ ইউনিট যেভাবে সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে কাজ করছে সেটি সত্যিই মনোমুগ্ধকর। আমরা এটিই চাই।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলিষ্ঠ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করেন ঠিক একইরকম স্পিডকে ধারণ করে রাজনীতি করব। এটাই আমাদের মৌলিক চাওয়া। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যদি সেই কাজগুলো করতে পারি তাহলে আগামীদিনে আমাদের লক্ষ্যগুলো সহজে অতিক্রম করতে পারব।
ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে সবসময় সোচ্চার থাকবে উল্লেখ করে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, যারাই এ বাংলাদেশের মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার নিয়ে নতুন করে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করবে, আগুন সন্ত্রাস কায়েম, রাজাকারদের রাজনীতি বাংলার মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে এবং যারা এ দেশের জনগণকে অপমান করে বিদেশিদের ধরে বাংলার ক্ষমতার মসনদে বসার স্বপ্ন দেখবে, তাদের স্বপ্নকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে, শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন বিনির্মাণ করার প্রয়োজনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।
সাদ্দাম আরও বলেন বলেন, ফেনীর যে ঐতিহ্য রয়েছে এটি সত্যিই আমাদের জন্য আশা জাগানিয়া। আপনাদের পরতে পরতে বীরের ইতিহাস। ফেনীর ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও বিজয়ের ইতিহাস লেখা রয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই এ ফেনীর গৌরবগাঁথা মাটি থেকে জন্ম নিয়ে আমাদের রাজনীতি, কথাসাহিত্য, পর্বত জয় ও অলিম্পিয়াডে নেতৃত্বে দেবে। আলোকিত মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ফেনী জেলা ছাত্রলীগ হবে ফেনীর সকল আলোকিত তরুণদের সেই প্রতিষ্ঠান। এতো অজস্র নেতাকর্মীর সঙ্গে ভোর দেখতে পারা আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলোর একটি। শুক্রবার সকাল থেকে সাংগঠনিক নানা কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তারপর ফেনী আসতে আসতে কিছুটা ঘুম, ক্লান্তি লাগছিল। কিন্তু সেই সময়ই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভোরের পাখি হয়ে সুবাস ছড়াতে ছড়াতে এখানে এসেছে।
পথসভায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, এতো ভোরে জেলা পর্যায়ে এমন বড় জমায়েত করে ফেনী জেলা ছাত্রলীগ একটি রেকর্ড করেছে। এটির মাধ্যমে ফেনী ছাত্রলীগকে একটি মডেল ইউনিট হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। এ ইউনিট অনেক সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত। আগামীতে একটি ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে আবার এ জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা হবে বলে আশাবাদী।
ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদের পরিচালনায় পথসভায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিটের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে পথসভাকে কেন্দ্র করে ফেনী পৌরসভা চত্বরে রাতভর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অপেক্ষায় থাকেন ফেনী জেলা ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত, সড়কপথে ফেনী হয়ে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে যাওয়ার পথে এ পথসভায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।