হামাসের রকেট হামলায় ইসরায়েলের ৩ সৈন্য নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েল-গাজার মধ্যবর্তী কেরেম শালোম সীমান্ত ক্রসিংয়ে হামাসের রকেট হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
সোমবার (৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার ভেতর থেকে হামাসের রকেট হামলার পর ইসরায়েল গাজায় কেরাম শালোম ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, এই হামলায় তাদের তিন সৈন্য নিহত হয়েছে এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড বলেছে, তারা কেরেম শালোম ক্রসিংয়ে হামলা চালিয়েছে এবং স্বল্প-পাল্লার রকেট দিয়ে তারা ইসরায়েলি সৈন্যদের লক্ষ্যবস্তু করেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, কেরেম শালোম থেকে প্রায় ৩.৬ কিলোমিটার (২.২ মাইল) দক্ষিণে গাজার রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছে একটি এলাকা থেকে ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
আইডিএফ আরও বলেছে, একটি বেসামরিক আশ্রয়কেন্দ্রের প্রায় ৩৫০ মিটার দূরে অবস্থিত একটি স্থাপনা থেকে এসব রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে পরে তারা লঞ্চার এবং কাছাকাছি একটি সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করে দিয়েছে।
গাজায় সাত মাস ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে এবং এতে করে সেখানে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। চলমান এই সংঘাতের মধ্যে গাজার অসহায় ও দুর্গত মানুষকে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীসহ মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য যে কয়েকটি পথ ব্যবহৃত হয়ে আসছে তার মধ্যে এই ক্রসিংটি অন্যতম।
এদিকে মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তির জন্য চুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী আলোচনা করেছে। এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, সর্বশেষ রাউন্ডের এই আলোচনা রোববার শেষ হয়েছে এবং তাদের প্রতিনিধিদল এখন হামাস নেতৃত্বের সাথে পরামর্শ করতে কায়রো থেকে কাতারে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) প্রধান উইলিয়াম বার্নস এই মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় জড়িত ছিলেন এবং তিনিও এখন দোহায় আলোচনার জন্য মিসরের রাজধানী ত্যাগ করেছেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির এই চুক্তি হলে ৪০ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ হবে এবং ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনিদের বন্দিদের সাথে গাজায় আটক বন্দিদের বিনিময় করা হবে। হামাস বলেছে, তারা বর্তমান প্রস্তাবটিকে ‘ইতিবাচক আলোকে’ দেখেছে, তবে মূল পয়েন্ট হচ্ছে- যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনটি হবে তা নিয়ে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি যে কোনও চুক্তিতে যুদ্ধের অবসানের জন্য নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিচ্ছে, তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রোববার তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি দাবি করেছেন, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্র (হামাসের এই দাবি) মেনে নিতে পারে না, আমরা এমন পরিস্থিতি মেনে নিতে প্রস্তুত নই যেখানে হামাস ব্রিগেডগুলো তাদের বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে আসবে এবং আবারও গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে, তাদের সামরিক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করবে এবং ইসরায়েলের নাগরিকদের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।’
ইসরায়েলের এই কট্টরপন্থি প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, ‘এটি ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য হবে ভয়ঙ্কর পরাজয়।’