স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ডেঙ্গুতে আমি আমার মাকে হারিয়েছি। আর কাউকে যেন মা হারাতে না হয়, সেই পদক্ষেপ নেব।
মঙ্গলবার (০৭ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ডেঙ্গুবিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, ১৯৮০ সালে ডেঙ্গুতে আমি আমার মাকে হারাই। তখন কিন্তু ডেঙ্গু বিষয়ে আমরা জানতাম না। মাত্র তিন দিনের জ্বরে আমার মা মারা গিয়েছিলেন। মারা যাওয়ার পর শরীরে স্পট দেখে বুঝতে পারি, মা ডেঙ্গুতে মারা গিয়েছিলেন। ডেঙ্গু বিষয়ে আমার একটা আলাদা ভীতি আছে। আমি আমার মাকে হারিয়েছি। আর কাউকে যেন তার মা হারাতে না হয়, সে বিষয়ে অবশ্যই আমি পদক্ষেপ নেব।
মন্ত্রী বলেন, আজ এখানে এসে নতুন করে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একা নয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশনের মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, আমাদের সংসদ সদস্যরা, সর্বোপরি ডেঙ্গু মোকাবেলায় সাংবাদিকদের অবদান কিন্তু কম নয়। সাংবাদিকরা যদি অ্যাওয়ারনেস তৈরি করতে পারেন।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু যদি গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমাদের ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হবে। রোগ হয়ে গেলে তখন আমরা চিকিৎসা করি। কিন্তু মানুষ যেন অসুস্থ না হয়, সেজন্য আমাদের কাজ করতে হবে। একইভাবে ডেঙ্গু যেন না হয়, সেজন্য আমাদের কাজ করতে হবে। এ জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সব জায়গায় এমনকি মসজিদ মন্দিরেও ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা প্রয়োজন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, আমি খুব খুশি, স্থানীয়ভাবে একটি ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট তৈরি করা হয়েছে। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। আমি সাধুবাদ জানাই। এ কিট যদি অনুমোদন পায়, তবে এটি যেন বাজারে আসে, সেই ব্যবস্থা আমরা করব। আমাদের দেশেই যদি কিট উৎপাদন করতে পারি, তাহলে বাইরের দেশ থেকে কেন কিনব।
মন্ত্রী বলেন, এখানে বক্তৃতা দেওয়ার পর বের হয়ে সব কিছু ভুলে গেলে হবে না। আমাদের কাজ করতে হবে। কথা কম কাজ বেশি, এটি আমি সবসময় বিশ্বাস করি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা চাই। আপনারা আমাকে পরামর্শ দিন। সারা দেশে এমনকি উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকরাও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ডেঙ্গুর চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি হবে না। ডেঙ্গুর ভালো চিকিৎসা ঢাকাসহ সারা দেশে হবে, এতে সন্দেহ নেই।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের ইউএইচসি প্রোগ্রামের চেয়ারপারসন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশিদ আলম।
আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগামের পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান, বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর ক্যামিকেল অ্যান্ড মেজারমেন্টসের মহাপরিচালক ড. মালা খাতুন প্রমুখ।