ভারতের ১৮তম সাধারণ লোকসভা নির্বাচনের ৫৪৩টি আসনের চূড়ান্ত ও আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার (৪ জুন) মধ্যরাতে দেশটির নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, গত দুই বারের মতো এবারও ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সবচেয়ে বেশি ২৪০টি আসন পেয়েছে।
তবে তারা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৯টি আসন পেয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস।
এছাড়া অন্য দলগুলোর মধ্যে সমাজবাদী পার্টি (এসপি) ৩৭টি, তৃণমূল কংগ্রেস ২৯টি, ডিএমকে ২২টি, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ১৬টি, জনতা দল (জেডি-ইউ) ১২টি, শিবসেনা (উদ্ভব) নয়টি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপিএসপি) সাতটি ও শিবসেনা (এসএইচএস) সাতটি আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া সাতটি আসনে জয়ের পাশাপাশি একটি আসনে এগিয়ে রয়েছে এনসিপিএসপি।
সব আসনের ফলাফল ঘোষণা শেষে দেখা যাচ্ছে এবারের নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
তবে মোদির বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ‘এনডিএ’ ২৯২টি আসন পেয়েছে। অপরদিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩৪টি আসন। অন্যান্য দলগুলো পেয়েছে বাকি ১৭টি আসন।
গত ১৯ এপ্রিল লোকসভার নির্বাচন শুরু হয়। যা সাত ধাপে গত ১ জুন পর্যন্ত চলেছে। নির্বাচনের আগে যেসব জরিপ চালানো হয়েছিল সেগুলোতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি ভূমিধস জয় পাবে। এছাড়া ১ জুন নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে বুথ ফেরত জরিপ প্রকাশ করা হয়েছিল সেখানেও বলা হয়েছিল মোদির দল একাই ৩৫০ আসন পাবে। আর জোট হিসেবে তারা চারশরও বেশি আসনে জয়ী হবে।
তবে জরিপের সব ফলাফল ভুল প্রমাণ হওয়া শুরু করে মঙ্গলবার সকালে যখন ভোট গণনা ও ফল আসা শুরু করে। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, কংগ্রেসের ‘ইন্ডিয়া’ জোট অবিশ্বাস্যরকম ফলাফল করছে। যেখানে ধারণা করা হয়েছিল এ জোট সবমিলিয়ে ১০০টি আসনও পাবে না সেখানে তারা এই সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এর মাধ্যমে মূলত ভারতে ‘মোদি ঢেউ’ আটকে দিয়েছে জোটটি।
গত নির্বাচনে মোদির এ জোটটি সবমিলিয়ে ৩৫৩টি আসন পেয়েছিল। আর বিজেপি একাই পেয়েছিল ৩০২টি আসন। সেখান থেকে এবার তারা প্রায় ৬০টি আসন কম পেয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটিতে বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েছে। আর এ বিষয়টিই এবারের নির্বাচনে প্রভাব রেখেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পৃথিবীতে যত গণতান্ত্রিক দেশ রয়েছে তাদের মধ্যে ভারত সবচেয়ে বড়। গত দেড় মাসে নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে চলছে মহাযজ্ঞ। সব ভোটার যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য সব ধরনের চেষ্টাই করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।