বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোটা সংস্কার এবং পেনশনবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন আছে। পেনশন স্কিম প্রত্যাহার করতে হবে।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব তথ্য জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি দেশের সব কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা সম্প্রতি শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার জন্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের সম্পৃক্ত করে সরকারি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীরা প্রতিবাদ করছে। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় একটা অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে এটি এই দেউলিয়া সরকারের দুর্নীতির আর একটি পথ খুলে দিয়েছে। যেহেতু দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম সংকটাপন্ন সেহেতু অন্যান্য খাতসহ শিক্ষকদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে এই পেনশনের টাকা তুলে নিতে চাচ্ছে সরকার। সর্বজনীন পেনশন স্কিম নামে নতুন স্কিম চালু করা সরকারের দুর্বল আর্থিক খাত মেরামত করার একটা কৌশল। অবৈধ ও আর্থিকভাবে দেওলিয়া সরকারের আরেকটি নুতন লুটপাট স্কিম যার নাম প্রত্যয় স্কিম। এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক সমাজের যে আন্দোলন ও প্রতিবাদ শুরু হয়েছে তা অবশ্যই যৌক্তিক ও সমর্থন যোগ্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের এই যৌক্তিক আন্দোলন সমর্থন করছি এবং অবিলম্বে এই পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সাংবিধানিক ভাবে ও আইনের দৃষ্টিতে সব নাগরিক সমান। ৫৬ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা বহাল রেখে প্রযুক্তি ও মেধানির্ভর বিশ্বব্যবস্থায় জাতি হিসাবে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। প্রথম, দ্বিতীয় ,তৃতীয় তথা কোনো শ্রেণীতেই কোটা পদ্ধতি মেধা বিকাশে সহায়ক হতে পারে না।
বর্তমান অবৈধ, অনির্বাচিত, কতৃত্ববাদী সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে ছাত্রসমাজের ন্যায্য আন্দোলনকে দমানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে প্রযুক্তি ও জ্ঞান ভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যবস্থায় টিকে থাকতে হলে মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তাই সাধারণ ছাত্র সমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবি সমূহের সঙ্গে আমরা একমত। আইন ও বিচার বিভাগের দোহাই দিয়ে ছাত্র সমাজের যৌক্তিক দাবিসমূহকে দমানোর সব অপচেষ্টাই ব্যর্থ হবে বলে বিশ্বাস করি। আশা করি সরকার সময় থাকতে ছাত্রসমাজের যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবী সমূহ মেনে নেবে। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবী মেনে নিয়ে এই সমস্যা সমাধানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।