কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ স্লোগানকে ‘চরম ধৃষ্টতা’ বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এর জবাব ছাত্রলীগই দেবে।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের কতিপয় নেতা যেসব বক্তব্য রেখেছেন, তার জবাব দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগসহ…। এ আত্মস্বীকৃত রাজাকার, যারা নিজেদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন গত রাতে, তার জবাব তারাই (ছাত্রলীগ) দেবে।
তিনি বলেন, ছাত্রদের বিষয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত সীমিত থাকবে। আমরা দেখি রাজনৈতিকভাবে কারা প্রকাশ্যে আসে। তখন দেখা যাবে। আমরাও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন। এখানে আমাদেরও অনেক কিছু চিন্তাভাবনা করে বলতে হয়, যাতে আদালত অবমাননা না হয়। আদালতের অবমাননার বিষয়টি আদালতকেই দেখতে হবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে কাদের বলেন, এটা অবশ্যই ধৃষ্টতা। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিষয়টি দেশের উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারের কোনোকিছুই করার নেই। বিচারাধীন বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য করা আদালত অবমাননার শামিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনের নামে দুর্ভোগ মেনে নেব না, রাস্তা বন্ধ করে জন দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সভা-সমাবেশ আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা লক্ষ্য করছি, এ আন্দোলনের কুশীলব বিএনপি-জামায়াত তাদের স্বরূপ উন্মোচিত করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আস্ফালনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানান কাদের।
তিনি বলেন, গত রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের অনেকের রাজনৈতিক বক্তব্য ও কুৎসিত স্লোগান আমরা শুনেছি। আশঙ্কা করেছিলাম, তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনই করতে যাচ্ছে। এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ আছে। সমর্থন তারা প্রকাশ্যই করেছে। আমাদের আশঙ্কা গতকাল রাতে আরও স্পষ্ট হয়েছে তাদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী স্লোগানে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য আন্দোলনের নেপথ্যে থাকা কুশীলবরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিকৃত করেছে। প্রধানমন্ত্রী সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, কোটা সুবিধা মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা পাবে না তো রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? এ কথা তিনি যথার্থই বলেছেন। ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে রাজাকারের ঠাঁই হতে পারে না। আমরা বলতে চাই, মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান বাঙালি সহ্য করবে না। পরাজিত শক্তির আস্ফালন মেনে নেব না।
তিনি বলেন, যে ছাত্ররা মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়, যারা নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিতে গৌরব বোধ করে, তাদের ঢাবির শিক্ষার্থী পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করা উচিত। তারা কীভাবে নিজেদের রাজাকার বলে স্লোগান দেয়? যারা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল চেতনাকে অবজ্ঞা করে, তারা কীভাবে মেধাবী? তারা কীভাবে জাতি ও ছাত্র সমাজের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে?