বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে অবস্থান নিয়ে ছাত্র হত্যার বিচার এবং ৬ সমন্বয়কারী ও আটক অন্য শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দেন তারা।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর পৌনে ২টার দিকে মাজার গেটে পুলিশের ব্যারিকেড পেরিয়ে আন্দোলনকারীরা সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে প্রবেশ করেন।
এ সময় তারা সমবেত কণ্ঠে গান পরিবেশন করেন। প্রায় আধা ঘণ্টার মতো সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের সামনে অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে দুপুরে শতাধিক শিক্ষার্থী মাজার গেটের সামনে অবস্থান নেন। এর মধ্যে, ঢাবি, বুয়েট, নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, গ্রিন ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।
এ সময় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মিছিল নিয়ে মাজার গেটের সামনে যান। এর আগেই মাজার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন গেটের বাইরে শিক্ষার্থীরা এবং গেটের ভেতরে আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকের খবর শুনে কিছু আইনজীবী গেটের পাশের ব্যারিকেড টপকে শিক্ষার্থীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। পরে কিছু শিক্ষার্থীকে ভেতরে নিয়ে আসেন তারা।
এ সময় আইনজীবী ও শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। ‘তোর কোটা তুই নে, আমার ভাইকে ফেরত দে’, ‘ছাত্রদের ওপর গুলি কেন, প্রশাসন জবাব দে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
কিছুক্ষণ পর আইনজীবীদের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে চলে আসেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে গিয়ে একটানা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় আধা ঘণ্টা পর তারা শিক্ষা ভবনের দিকে চলে যান।
শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, তৈমুর আলম খন্দকার, রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল ও মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
এদিকে, মাজার গেটের ভেতরে দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম, শারমিন মুরশিদ, রেহেনুমা আহমেদ আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস ও রাজপথে আজ ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল সংগঠনটির অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে তদন্ত করে বিচারের দাবিতে এ কর্মসূচি পালনের কথা উল্লেখ করা হয়।
ছাত্রসমাজের নয় দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করতে শিক্ষক, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও সব নাগরিকের প্রতি অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।