পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের জনেন্দ্র নাথ সরকারের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় তারা গ্যাস সরবরাহের চুরির অংশ সিস্টেম লসের নামে অন্যায় ভাবে জিটিসিএল এর উপর চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত জরুরী ভিত্তিতে বাতিলেরও দাবি জানান।
রবিবার ( ১৮ আগষ্ট) সকালে পেট্রোবাংলার কার্যালয়ের নিচে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন কর্মকর্তা- কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, পেট্রোবাংলার দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের কারণে জাতীয় গ্যাসগ্রীড পরিচালনাকারী রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেড (জিটিসিএল) আজ বৈষম্যের কষাঘাতে ধ্বংসের মুখোমুখি। জনেন্দ্র নাথ সরকার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ উদ্যোগে মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন প্রষ্ঠিানের কারিগরি ও সিস্টেম লসের নামে গ্যাস চুরির দায়ের সিংহভাগ জিটিসিএল-এর উপর অন্যায় ভাবে চাপিয়ে দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে গত ত্রিশ বছর ধরে আর্থিক লাভে থাকা কোম্পানিটি বিপুল আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১২১২.৩৩ কোটি টাকা এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এই ক্ষতির ধারা অব্যাহত থাকায় রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান জিটিসিএল আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
তারা বলেন, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে পরিচালিত জিটিসিএল পরিচালনা পর্ষদকে সরকার কর্তৃক পূর্ণ স্বায়ত্তশাষিত প্রতিষ্ঠান। পেট্রোবাংলার দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার ও তার দোসর পরিচলক অপারশন এন্ড মাইন (চুক্তি ভিত্তিক) মো কামরুজ্জামান উৎকোচের বিনিময়ে নিজেদের লোকদের নানা সুবিধা দিয়েছিলেন এবং যোগ্যদের বঞ্চিত করেছেন।যার কারনে কোম্পানিতে আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য চড়ম আকার ধারন করে এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছ।
তারা আরও বলেন, পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না থাকায় কোম্পানির সঞ্চালন পাইপলাইনসমূহ পূর্ণ সক্ষমতায় ব্যবহৃত হচ্ছে না। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের অতি উৎসাহ এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণের ফলে প্রতিষ্ঠানটি ঋণের ভাড়ে জর্জরিত।
অপরদিকে গ্যাসের জোগানের নিচ্ছয়তা না থাকলেও চারটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে এবং পাঁচটি প্রকল্প গ্রহণের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছ।এ নয়টি প্রকল্পে প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। নতুন প্রকল্পসমূহ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের লুটপাটে সহযোগিতার জন্য নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মানববন্ধন থেকে কর্মকর্তা- কর্মচারীরা ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন।সেগুলো হলো:
১. অবিলম্বে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর পেট্রোবাংলার স্বৈরাচারী চেয়ারম্যান জনেনন্দ্রনাথ সরকারকে অপসারণ করতে হবে।
২. গ্যাস সরবরাহের চুরির অংশ সিস্টেম লসের নামে অন্যায় ভাবে জিটিসিএল এর উপর চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত জরুরী ভিত্তিতে বাতিল করতে হবে।
৩. বৈষমামুলক অর্গানোগ্রাম দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে আন্ত ক্যাডার বৈষম্য দূর করে কোম্পানিতে সুষ্ঠ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. অপ্রয়োজনীয়, অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ বন্ধ করতে হবে।