ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শহীদ ২৫ পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে জামায়াতে ইসলামী।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শনির আখড়ায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে এ নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
এসময় শহীদ পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, যাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসন করতে হবে।
বুলবুল বলেন, শহীদ পরিবারের সদস্যদের কষ্ট ও কলিজা ছেঁড়া আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। রক্ত সাগর পাড়ি দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে আমরা একটি মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি, মত প্রকাশের সুযোগ পেয়েছি। রাষ্ট্রীয় সকল শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট অপশক্তি ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে ব্যর্থ করে দিতে চেয়েছিল। ইতিহাস সাক্ষী ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯ গণঅভ্যুত্থান ছিল ছাত্রদের নেতৃত্বে। ছাত্রদের আন্দোলন কখনও ব্যর্থ হয়নি।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ব্যর্থ করার সকল রকম অপচেষ্টা করেও এই জুলুমবাজ ফ্যাসিস্ট সরকার পার পায়নি। ৫ আগস্ট লক্ষণ সেনের মতো পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জুলুম নির্যাতন চালিয়ে এ দেশকে বসবাসের অযোগ্য ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। বিচারব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে বিচারের নামে অবিচার শুরু করেছিলো। তারা জুডিসিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের সীমানাকে অরক্ষিত করে সীমান্তে ফেলানীর মত লাশ উপহার দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশ পুনর্গঠন করতে হবে। দেশপ্রেমিক শক্তির মাধ্যমে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিপ্লবোত্তর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ৫ আগস্ট থেকেই দুর্বৃত্তদের লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও চাঁদাবাজির প্রতিরোধ এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়সহ দেশের মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে।
ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্র জনতার এই ঐতিহাসিক বিজয়কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করলে এর দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে। এদেশের জনগণ এখন সজাগ ও সচেতন রয়েছে কোনও কুচক্রী মহলের আর কোনও দেশবিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেবে না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে দেশপ্রেমিক অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেই সকল শহীদ পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে তাদের কর্মসংস্থান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুর রহিম জীবন।