অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকার জন্য নিষিদ্ধ করা হয়নি। তাদের দীর্ঘদিনের অন্যায়-অপকর্মের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই ছাত্রলীগের কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অধিকার নেই। ছাত্রলীগের কেউ মিছিল করলে তাদের বিরুদ্ধে অন্য নিষিদ্ধ সংগঠনের মতো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা ছাত্রলীগের অপকর্মের বিচার করবো, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। নিষিদ্ধের পর তারা মিছিল করার চেষ্টা করেছিল। সেখানে পুলিশের অ্যাকশন আপনারা দেখেছেন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে এক সুধী সমাবেশে আইজিপি এসব কথা বলেন। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদত বরণকারী ও আহত বীরদের সম্মানে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নতুন করে অস্ত্র নীতিমালা করা হচ্ছে জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, গত ১৫ বছরে যাদের অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার কথা ছিল না, তারা অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছিলেন এবং এই অস্ত্র গণ-অভ্যুত্থানে নিরীহ জনগণের বুকে ব্যবহার করা হয়। বিগত সরকারের ফ্যাসিস্টরা বৈধ অস্ত্র নিয়ে অবৈধভাবে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে। এই অস্ত্রে অসংখ্য ছাত্র-জনতা আহত ও শহীদ হয়েছেন। অনেকে দীর্ঘস্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আইজিপি বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করছে। এ মামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন ঘটনায় পুলিশের কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তা জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গণ-অভ্যুত্থানের আগে নেতৃত্ব পর্যায়ের গুটিকয়েক বিপথগামী কর্মকর্তার কারণে পুলিশ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন আইজিপি। তিনি বলেন, এখন আমরা জনগণের আস্থার পুলিশ তৈরি করতে চাই। পুলিশ সুপার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে ধারাবাহিকভাবে বদলি করা হচ্ছে। এই পদে যারা যোগ্য তাদের আনা হচ্ছে।
ময়নুল ইসলাম বলেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারেনি। পুলিশ স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। করোনার সময় পুলিশের মানবিক কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু সেই পুলিশ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের আন্দোলনে মানবিক জায়গা হারিয়েছে। কিছু নেতৃত্ব প্রদানকারী কর্মকর্তাদের কারণে পুলিশ মানুষের প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছে। আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তাই আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষার পুলিশ গঠন করতে চাই। এ লক্ষ্যে সংস্কার কমিশন কাজ করছে। পুলিশে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসবে।