পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে বহিরাগতদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে কলেজ দুটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাড়ি, ক্লাসরুম, অফিস থেকে শুরু করে হামলা থেকে কোনোকিছুই বাদ যায়নি। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও হামলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের স্নাতক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা পুরো পরীক্ষা শেষ করতে পারেননি।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। কয়েক ঘণ্টা পার হলেও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।
সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে হামলা ও ভাঙচুরের সুনির্দিষ্ট কারণ দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ-এর মৃত্যু অপচিকিৎসার কারণে হয়েছে, এমন দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের ওপর সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে ভাঙচুর চালান ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রায় সব বিভাগ ও ক্লাসরুম আসবাবপত্র ভাঙচুর হয়েছে। তবে বিষয়টি সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এসময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ কেন্দ্রে অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষা দিতে আসা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত ও রক্তাক্ত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
অপরদিকে হামলার বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একটি পাবলিক পরীক্ষা চলমান ছিল। তারপরও কেন হামলার ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।
ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে তিনি বলেন, কলেজের কোনো অফিস এবং কোনো বিভাগের কক্ষই অক্ষত নেই। পুরো কলেজ এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দুজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত গাড়ি এবং কলেজের গাড়িটিও ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ পরে জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, রাজধানীর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অভিজিৎ হালদার (১৮) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ভুল চিকিৎসা ও অনিয়মের অভিযোগ হাসপাতালের প্রধান ফটক আটকে ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত এ হাসপাতালের সামনে লাঠিসোঁটা হাতে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।