ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে ভারতের শাসক গোষ্ঠী ‘সংখ্যালঘুর বিষয়টিকে’ সামনে এনে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
ভারতের শাসক গোষ্ঠী বিভেদের রাজনীতি ও বাংলাদেশবিরোধী মিথ্যাচারে লিপ্ত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার, সহিংসতা ও আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলার ঘটনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক ও এক্স অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে তথ্য উপদেষ্টা একথা বলেন।
ইংরেজিতে লেখা এ বিবৃতিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে; তারা আমাদের স্টেকহোল্ডার।
বাংলাদেশে চলমান গণঅভ্যুত্থানের সময় কলকাতা ও দিল্লির ছাত্ররা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনার নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ’
ভারতের এই গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষেরা বাংলাদেশের বন্ধু উল্লেখ করে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘তবে ভারতের শাসকগোষ্ঠী ও হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলো এ ধরনের গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি চায় না।
তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থান এবং এর ছাত্রদের রাজনৈতিক জাগরণকে হুমকি হিসেবে দেখে। ফলে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করছে।
তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু নিপীড়ন’ গল্প সাজিয়ে দিল্লি ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও জাতি-পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, শুরু থেকেই আমরা জোর দিয়ে আসছি যে ভারত সরকারকে বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা বন্ধ করতে হবে এবং ন্যায়, ন্যায্যতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে একটি নতুন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।
বাংলাদেশ হিন্দুসহ সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পূর্ণ নাগরিক অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলেই সংখ্যালঘুরা সর্বোচ্চ নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছে। তবুও দিল্লি নিঃশর্তভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে।
ভারত তার নিজের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিপীড়নকারী ও গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগকে আশ্রয় ও সমর্থন দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, গণহত্যা ও শিশু হত্যার জন্য দায়ী পলাতক শেখ হাসিনাকে আশ্রয় ও সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ভারত সরকার অভিন্ন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ক্ষুণ্ন করার ঝুঁকিতে রয়েছে।
নাহিদ বলেন, ভারতের স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তা ভুলে গেলে চলবে না।
বিজেপি বাংলাদেশকে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে এমনটি হলে তা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে বলে সতর্ক করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশবিরোধী ও মুসলিমবিরোধী রাজনীতি ভারতের জাতীয় স্বার্থে কাজ করবে না বা এর ঐক্যে অবদান রাখবে না। তাই আমরা ভারতকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতি সম্প্রীতি ও সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানাই। ’