নিজেকে থানার ওসি পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় দিনাজপুর কোতোয়ালি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগী আপেলকে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী। পরে তাদের কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুরপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার আব্দুর রাজ্জাককে ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ।
আব্দুর রাজ্জাক সদর উপজেলার নহনা গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে ও আপেল একই এলাকার শাহাদতের ছেলে।
এদিকে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা চৈতু বর্মন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নহনা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে শাহীনুর ইসলাম, আপনের ছেলে শান্ত, সাহাদুলের ছেলে আক্তারুল, শ্রী উজ্জ্বল রায়, শ্রী তাপস রায় ও শ্রী মহেশ চন্দ্র রায়।
মামলা, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি আব্দুর রাজ্জাক ও তার লোকজন মাইক্রোবাস নিয়ে রাত পৌনে ১২ টায় দিনাজপুর সদরে চৈতু চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে যান। নিজেকে কোতোয়ালি থানার ওসি পরিচয় দিয়ে চৈতু বর্মণকে থানায় যেতে বলেন। পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তোলে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে টাঙ্গাইলে বসবাসরত তার ছেলের ঠিকানা নিয়ে তাকে টাঙ্গাইলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ছেলে ইমনকে নিয়ে ৮ জানুয়ারি রাত ১০টায় আবার দিনাজপুর এসে একটি বাড়িতে আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। জীবন বাঁচাতে এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে রাজি হয়ে এক দিন সময় চান চৈতু। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুর রাজ্জাক ও লোকজন চৈতু ও তার ছেলেকে গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড়ে ডেকে নিয়ে টাকা দাবি করে। এ সময় এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে তাদের আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে আব্দুর রাজ্জাক ও আপেলকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এদিকে আজ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দিনাজপুর জেলা শাখার অধীনস্থ সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাককে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।’