জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, অন্যায়ের বিচার না হলে অপসংস্কৃতি বন্ধ করা সম্ভব না।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দিনাজপুর গোর-এ শহীদ মাঠে ২০ বছর পর আয়োজিত কর্মী সম্মেলনের তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান বেলাল, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হকসহ কেন্দ্রীয়, উত্তরাঞ্চল ও জেলার নেতারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, খুনের বিচার যদি না হয়, তাহলে খুনের সংস্কৃতি বন্ধ হবে না, লুটপাট, চাঁদাবাজির বিচার না হলে এগুলোর সংস্কৃতি বন্ধ হবে না।
দেশের সব অপকর্মের বিচার হতে হবে। এটা জামায়াতে ইসলামীর দাবি।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্দেশ্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনারা কখনই নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করবে না। সংখ্যালঘু বলে বলেই আপনাদের ওপর এতোদিন এতো অত্যাচার হয়েছে। আপনারা আমাদের ভাইবোন। আমরা সহমর্মিতার সঙ্গে, একসঙ্গে গর্বের সঙ্গে এই বাংলাদেশে বসবাস করতে চাই।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশ আমরা তোমাদের হাতে তুলে দিতে চাই। আমরা তোমাদের পাশে থেকে দোয়া করতে চাই, সাহায্য করতে চাই। আমরা দেখে যেতে চাই, আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ সাম্য, সৌহার্দ্য ও মানবিক বাংলাদেশ। এই মানবিক বাংলাদেশের জন্যই আমাদের সংগ্রাম, আমাদের সাধনা।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা মর্যাদা ও নিরাপত্তা ও আনন্দের সঙ্গে কাজ করবেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় দেখা হবে না কে কোন দলের, কে কোন ধর্মের। দেখা হবে তিনি উপযুক্ত কিনা। যোগ্য ব্যক্তির হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে।
তরুণ সমাজকে এতদিন ভুল বোঝানো হয়েছিল বলে তিনি বলেন, এখন তারা (তরুণরা) বুঝতে পেরেছেন, সবই ছিল দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র। সাবেক প্রধানমন্ত্রী যে গালি দিয়েছিলেন তার প্রকৃত জবাব তিনি পেয়েছেন। তবে আমাদের লড়াই ও সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। সংগ্রাম সেদিনই শেষ হবে, যেদিন সত্যিকার অর্থে একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে জামায়াতের আমির বলেন, যাদের দেশপ্রেম আছে তারা দেশের জনগণের টাকা চুরি করে না। তারা আমাদের বিরুদ্ধে অনেক বিষোদগার ছড়ায়। তারা নারী সমাজকে ভয় দেখিয়ে বলে, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারী সমাজকে আটকিয়ে রাখবে, বের হতে পারবে না। এই সমাবেশে নারীরা আছেন, তারা ঘর থেকে বের হয়েও এসেছেন। আমাদের মা-বোনেরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন, সামাজিক দায়িত্ব পালন করেন। সবই করেন, সবই করবে। আর জামায়াত ক্ষমতায় গেলে, বাড়তি দুটি কাজ করবে মর্যাদা ও নিরাপত্তা আনন্দের সঙ্গে করবে। এখন তাদের মর্যাদা কম, সামাজিক নিরাপত্তা নেই। এই দুটি সেদিন নিশ্চিত করা হবে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের সময় দেখা হবে না কে কোন দলের কে কোন ধর্মের, দেখা হবে তিনি উপযুক্ত কিনা। যোগ্য ব্যক্তির হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে।
সম্মেলনে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলার জামায়াত শিবিরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।