সমাজ বিনির্মাণে তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে: ইউজিসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে সফল নেতৃত্বের কারণে শিক্ষার্থীদের প্রতি জনসাধারণের আস্থা ও প্রত্যাশা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই জনপ্রত্যাশা পূরণ ও সমাজ বিনির্মাণে তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে।

আজ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাই যোদ্ধাদের ‘বুদ্ধিমান’, ‘সাহসী’, ‘অকুতোভয়’ ও ‘দৃঢ়চিত্তের অধিকারী’ আখ্যা দিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ফায়েজ বলেন, ‘তোমরা মৃত্যকে ভয় না পেয়ে দেশের স্বার্থে এগিয়ে এসেছো এবং তোমাদের ডাকে রাস্তায় নেমে এসেছিলো সাধারণ মানুষ। তোমাদের নিয়ে জাতি গর্ব করে। তোমাদের ওপর জাতির প্রত্যাশা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জুলাইয়ের চেতনা ধারণ করে সাহসিকতার সাথে সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে যেতে হবে। তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো জাতি।’

তিনি আরও বলেন, তোমাদের দায়িত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতির প্রত্যাশা পূরণে সজাগ থাকতে হবে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় টিম ওয়া্র্কের মাধ্যমে দেশের ১৭০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মাছুমা হাবিব, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম, শেকৃবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুল লতিফ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম। ইউজিসি’র ইন্টারন্যাশনাল কোলাবরেশন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোছা. জেসমিন পারভীন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

এছাড়া শেকৃবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. বেলাল হোসেন, জবির কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সাবিনা শারমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সৈয়দ তানভীর রহমান, ইউনেস্কোর প্রতিনিধি রাজু দাসসহ ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণে এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি-এর প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কমিশনের সদস্য প্রফেসর তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর মাছুমা হাবিব ও প্রফেসর আইয়ুব ইসলাম তাদের বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক সুরক্ষায় চলমান কার্যক্রম সহায়ক হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তারা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ইউজিসি ও ইউনেস্কো কর্তৃক গৃহীত এ যৌথ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

সভায় বক্তরা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিস্ট নিয়োগ, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে গুরুত্ব দেওয়া, পারস্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ বৃদ্ধি করা, সৃজনশীলতা সৎ চিন্তা ও মহৎ কাজ উৎসাহিত করা, আমিত্ব দূর করা, এবং শিক্ষার্থী বান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার পারামর্শ দেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সুরক্ষা সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে ইউজিসি ও ইউনেস্কো। প্রথম ধাপে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীকে এ সেবা দেওয়া হবে। ‘সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ প্রকল্পের অধীনে দেশের ২২টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে পিয়ার টু পিয়ার ওরিয়েন্টেশন দেওয়া হবে। ধাপে ধাপে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। ইউজিসি ও ইউনেস্কো জুলাই-আগস্ট ২০২৪- এর চেতনাবোধ সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য এ প্রকল্প গ্ৰহণ করা হয়।