বিভিন্ন প্রকারের ভূমি জরিপ এবং এর ফলে সৃষ্ট খতিয়ান
ভূমি জরিপ এবং খতিয়ান কি?
নির্দিষ্ট কোন এলাকার প্রত্যেক ভূখন্ড সরেজমিনে পরিমাপ করে নির্দিষ্ট স্কেল অনুসারে এর অবস্থান এবং আয়তন সম্বলিত একটি মৌজা নকশা প্রণয়ন করে প্রত্যেক ভূখন্ডের মালিক, দখলদার, জমির পরিমাণ, মালিকানার পরিমান, জমির শ্রেণী ইত্যাদি সম্বলিত ভূমি রেকর্ড বা খতিয়ান প্রনয়ন করাই ভূমি জরিপ। সহজ কথায়, মৌজা নকসা প্রণয়ন এবং স্বত্বলিপি (RoR) তৈরির কাজকে ভূমি জরিপ বলা হয়।বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন জরিপ নিম্নরূপঃ
সি,এস, জরিপ (Cadestral survey) বা সি,এস, খতিয়ান):
১৮৮৮ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকারের তত্বাবধানে বাংলায় একটি ভূমি জরিপ হয় যাকে সি,এস, জরিপ বলে। কক্সবাজারের রামু থানা থেকে শুরু হয়ে দিনাজপুরে এ জরিপ শেষ হয়। প্রথম হলেও এ জরিপকে নির্ভুল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই জরিপের মাধ্যমে তৈরি নকশাকে সি,এস, নকশা; এবং খতিয়ানকে সি,এস, খতিয়ান বলা হয়। মামলা-মোকদ্দমায় কিংবা বিবাদ মিমাংশার ক্ষেত্রে এ খতিয়ানকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়।
এস,এ, জরিপ বা এস,এ, খতিয়ানঃ
রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর মাধ্যমে জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ হবার পর জমিদারদের নিকট থেকে অধিগ্রহনকৃত জমির হিসাব নির্নয়, বিলুপ্ত জমিদারীর ক্ষতিপূরন প্রদান, জমির দখলদার রায়তদের জমির মালিক হিসেবে সরকারের অধীনে আনয়ন ও মালিকানার স্বীকৃতি প্রদান প্রভৃতি কারনে ভুমি জরিপের প্রয়োজন দেখা দেয়। সি,এস, রেকর্ড সংশোধনের লক্ষে জমিদারদের নিকট থেকে কাগজপত্র সংগ্রহের পর ১৯৫৬ থেকে ১৯৬২ এর মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত জরিপের মাধ্যমে যে রেকর্ড প্রস্তুত হয়, তাকে এস,এ, জরিপ বা এস,এ, খতিয়ান বলে। সংক্ষিপ্ত সময়ে জমিদারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এ জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান প্রস্তুত হয় বলে এতে প্রচুর ভুল-ভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়।
আর,এস, জরিপ বা আর,এস, খতিয়ানঃ
এস,এ, জরিপের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত খতিয়ানে প্রচুর ভুল-ভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয় বিধায় তা সংশোধনের লক্ষে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তেতে তৎকালিন সরকার ১৯৫৬ সাল থেকে যে সংশোধনী জরিপ পরিচা্লনা করে, তাই আর,এস, জরিপ বা আর,এস, খতিয়ান নামে পরিচিত। ইতোমধ্যে দেশের অধিকাংশ এলাকায় এ জরিপ শেষ হয়েছে এবং কিছু এলাকায় এখনো চলছে। এখানে উল্লেখ্য যে, বি,এস, জরিপ; মহানগর জরিপ মূলতঃ আর,এস, জরিপের অন্তর্ভুক্ত। সৌজন্যেঃ ল্যান্ডরেজিস্ট্রেশনবিডি