রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯০৮ এর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধারা
ধারা- ২১। সম্পত্তির বর্ণনা এবং ম্যাপ ও প্লান-
(১) স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত সর্ব প্রকার দলিলে সম্পত্তির পরিচয় এইরূপ ভাবে দিতে হইবে, যাহাতে সম্পত্তির সঠিক পরিচয় কি, তাহা জানিতে পারা যায় নতুবা রেজিস্ট্রারিং অফিসার উহা রেজিস্ট্রিককরনের জন্য গ্রহন করিবেন না।
(২) শহরে অবস্থিত ঘর-বাড়ির ক্ষেত্রে, উহা রাস্তার কোন দিকে অর্থাৎ উত্তরে কি অন্য কোন দিকে অবস্থিত তাহা এবং উক্ত রাস্তার নাম, বাড়ির অতীত ও বর্তমান দখলকারের নাম এবং রাস্তায় বাড়ির নম্বর থাকিলে তাহা দলিলে লিখিতে হইবে।
(৩) অন্যান্য ঘড়-বাড়ী এবং জমির ক্ষেত্রে উহার নাম, যদি থাকে, কোন এলাকায় অবস্থিত এবং উহাতে অবস্থিত অতিরিক্ত কোন জিনিস, রাস্তা এবং অন্য কোন সম্পত্তি যাহাতে উহা সন্নিহিত, উহার বর্তমান দখলকার এবং সম্ভব হইলে কোন সরকারী ম্যাপ বা নকশা অনুসারে বর্ণনা করিতে হইবে।
(৪) দলিলে কোন ম্যাপ বা নকশা থাকিলে তাহার অবিকল নকলসহ দাখিল করিতে হইবে। সম্পত্তি যতগুলি জেলায় অবস্থিত হইবে, ততগুলি ম্যাপ বা নকশার নকল দাখিল করিতে হইবে, নতুবা দলিলটি রেজিস্ট্রির জন্য গ্রহন করা হইবে না।
ধারা- ২২ক । হস্তান্তর দলিল-(১) এই আইনের অধীন বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধনযোগ্য প্রতিটি হস্তান্তর দলিলে পক্ষগণের অভিপ্রায় জ্ঞাপনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি, হস্তান্তরাধীন সম্পত্তির পূর্ণ বিবরণ এবং লেনদেনের প্রকৃতি অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(২) প্রত্যেক দলিলে সম্পাদনকারী এবং গ্রহীতা উভয়ের ছবি আঠা দ্বারা সংযুক্ত করিতে হইবে এবং পক্ষগণ দলিলে সংযুক্ত ছবির উপর আড়াআড়িভাবে দস্তখত ও বাম বৃদ্ধাঙ্গুলীর টিপছাপ প্রদান করিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোনো পক্ষ নাম সাক্ষর করিতে অক্ষম হন, তাহা হইলে তাহাকে নাম সাক্ষর করিতে হইবেনা।
ধারা- ২৩। দলিল দাখিলকরণের সময়ঃ ধারা ২৪, ২৫ এবং ২৬ এর বিধানাবলী সাপেক্ষে, উইল ব্যতিত অন্য কোন দলিল যদি উহা সম্পাদনের তারিখ হইতে তিন মাসের মধ্যে উপযুক্ত কর্মকর্তার নিকট রেজিস্ট্রেশনের উদ্দেশ্যে দাখিল করা না হয়, তাহা হইলে উহা রেজিস্ট্রেশনের জন্য গৃহীত হইবে না।
তবে শর্ত থাকে যে, ডিক্রি বা আদেশের নকল, ডিক্রি বা আদেশ দানের তারিখ হইতে তিন মাসের মধ্যে, বা যেক্ষেত্রে উহা আপিলযোগ্য, সেইক্ষেত্রে আপিল চুড়ান্ত হওয়ার তারিখ হইতে তিন মাসের মধ্যে দাখিল করা যাইবে।
ধারা- ৪৭। নিবন্ধিত দলিল যে সময় হইতে কার্যকর হয়ঃ-
কোন নিবন্ধিত দলিল, যদি উহার নিবন্ধন আবশ্যক না হইত, তাহা হইলে উহা, যে সময় হইতে কার্যকর হইত সেই সময় হইতেই কার্যকর হইবে, নিবন্ধনের সময় হইতে নহে।
ধারা- ৪৯। নিবন্ধনযোগ্য দলিল নিবন্ধন না হওয়ার ফলঃ-
এই আইনের অধীন বা দলিল নিবন্ধনের বিধান-সংবলিত বা সম্পর্কিত পূর্ববর্তী কোন আইনের অধীন কোন দলিলের নিবন্ধন প্রয়োজন হইলে, যদি উহা নিবন্ধিত না হয়, তাহা হইলে-
(ক) উক্ত দলিল স্থাবর সম্পত্তিতে কায়েমি বা সম্ভাব্য কোন অধিকার, স্বত্ব বা স্বার্থ বর্তমানে বা ভবিষ্যতে সৃজন, ঘোষণা, অর্পণ বা সীমিত করিতে বা অবসান ঘটাইতে কার্যকর হইবেনা; বা
(খ) উক্ত দলিল দত্তকগ্রহনের কোন ক্ষমতা অর্পণ করিবেনা ।
ধারা- ৫২এঃ [কোন স্হাবর সম্পত্তির বিক্রয় দলিল দাখিল করা হলে, যে পর্যন্ত নিম্নবর্ণিত বিবরনাদি দলিলে অন্তর্ভূত এবং দলিলের সহিত সংযুক্ত না করা হয়, সেই পর্যন্ত নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা দলিলটি নিবন্ধন করবেন না, যথা-
(ক) বিক্রেতা যদি উত্তরাধিকারপ্রাপ্তি ব্যতিত অন্যভাবে সম্পত্তির মালিক হইয়া থাকেন, তাহলে “রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন,১৯৫০” এর অধীন তার নামে প্রস্তুতকৃত সর্বশেষ খতিয়ান;
(খ) বিক্রেতা যদি উত্তরাধিকার প্রাপ্তিতে সম্পত্তির মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর অধিন তার নামে অথবা তার পূর্বসূরির নামে প্রস্তুতকৃত সর্বশেষ খতিয়ান;
(গ) সম্পত্তির প্রকৃতি ;
(ঘ) সম্পত্তির মূল্য;
(ঙ) সীমানা ও চৌহদ্দিসহ সম্পত্তির একটি নকশা;
(চ) সম্পত্তির মালিকানার গত ২৫ (পঁচিশ) বৎসরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা; এবং
(ছ) এই দলিল সম্পাদনের পূর্বে সম্পাদনকারী সম্পত্তিটি কোন ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করেন নাই এবং উহাতে তাহার বৈধ স্বত্ব বহাল আছে মর্মে দৃঢ়ভাবে ঘোষনা করিয়া একটি হলফনামা।]
ধারা- ৮০। এই আইন অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রিকরনের সমস্ত ফিস দলিলটি উপস্থাপনের সময় দিতে হবে।
ধারা- ৮২। মিথ্যা বিবৃতি প্রদান, মিথ্যা নকল বা অনুবাদ সরবরাহ, মিথ্যা পরিচয় দান ও অনুরূপ কার্যে সহযোগিতার শাস্তিঃ- কোন ব্যাক্তি-
(ক) এই আইনের অধীন যে কোন কার্যধারায় বা তদন্তে, শপথ করিয়া বা না করিয়া, তাহা রেকর্ডকৃত হউক বা না হউক, এই আইনবলে কার্যনির্বাহের জন্য কর্মরত কোন কর্মকর্তার সম্মুখে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন মিথ্যা বিবৃতি প্রদান করেন; বা
(খ) উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধারা ১৯ বা ধারা ২১ এর অধীন কোন কার্যধারায় কোন নিবন্ধনকারী কর্মকর্তার নিকট দলিলের মিথ্যা নকল, বা অনুবাদ অথবা কোন ম্যাপ বা প্ল্যানের মিথ্যা কপি সরবরাহ করেন; বা
(গ) প্রতারণামূলকভাবে অন্য কাহারও পরিচয় ধারণ করেন, এবং এইরূপ ভান-করা পরিচয়ে এই আইনের অধীন কোন কার্যধারায় বা তদন্তে কোন দলিল দাখিল করেন, বা কোন স্বীকারোক্তি প্রদান করেন, বা বিবৃতি প্রদান করেন, বা কোন সমন জারি বা কমিশন প্রেরণের কারণ ঘটান বা অন্য কোন কার্য করেন; বা
(ঘ) এই আইনের অধীন দন্ডনীয় কোন কার্য করিতে প্ররোচনা প্রদান করেন;
তাহা হইলে তিনি কারাদন্ডে দন্ডিত হইবেন যাহার মেয়াদ সাত বৎসর পর্যন্ত হইতে পারে, বা অর্থদন্ডে, বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
ধারা- ৮৪। রেজিস্ট্রারিং অফিসারকে সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে গণ্য করিতে হইবেঃ
(১) এই আইনানুযায়ী নিযুক্ত কোন অফিসার দণ্ডবিধির আইনানুসারে পাবলিক সারভেন্ট বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) এইরূপ রেজিস্ট্রারিং অফিসার কাহারও নিকট কোন সংবাদ চাহিলে তিনি আইনতঃ দিতে বাধ্য।
(৩) দণ্ডবিধির ২২৮ ধারায় “জুডিশিয়াল প্রসিডিং” অর্থে এই আইনানুযায়ী যে কোন কার্যপ্রণালীও বুঝাইবে।
ধারা- ৮৫। দাবিবিহীন দলিলপত্র বিনষ্টকরণঃ- উইল ব্যতীত, অন্য কোন দলিল ২ (দুই) বৎসরের অধিক সময়ের জন্য কোন রেজিস্ট্রি অফিসে দাবিবিহীন অবস্থায় থাকিলে তাহা বিনষ্ট করা যাইবে। সৌজন্যেঃ ল্যান্ডরেজিস্ট্রেশনবিডি