জমি জমার বিরোধ সম্পর্কিত ধারা

জমি জমার বিরোধ সম্পর্কিত ধারা

ধারা ১৪৫ জমি প্রভৃতি সংক্রান্ত বিরোধের ফলে শান্তিভঙ্গ হইবার সম্ভাবনা থাকিলে উহার ক্ষেত্রে     

ক) যখন কোন মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রথমে শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ রিপোর্ট বা অন্য কোনরুপে সংবাদ পাইয়া এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, তাহার অধিক্ষেত্রের স্থানীয় সীমার মধ্যে জমি বা পানি বা উহার সীমানা সম্পর্কে এমন  একটি বিরোধ রহিয়াছে, যাহা শান্তিভঙ্গ ঘটাইতে পারে, তখন তিনি তাহার এইরূপ সন্তুষ্ট হইবার কারণ উল্লেখ করিয়া তাহার দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহকে ব্যক্তিগতভাবে বা উকিলের মারফত তাহার আদালতে হাজির হইবার এবং বিরোধের বিষয়বস্তুতে প্রকৃত দখল সম্পর্কে তাহাদের স্ব-স্ব দাবি সম্বন্ধে লিখিত বিবৃতি পেশ করিবার নির্দেশ দিয়া একটি লিখিত আদেশ দিবেন।

খ) এই ধারার উদ্দেশ্যে “জমি বা পানি” বলিতে দালান, বাজার, মৎস্য খামার, ফসল বা জমিতে উৎপন্ন অন্যান্য দ্রব্য এইরূপ কোন সম্পত্তির খাজনা বা লভ্যাংশ অন্তর্ভুক্ত।

গ) ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশক্রমে এইরূপ ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণের উপর আদেশের একটি নকল, এই বিধিতে সমন জারির জন্য বিহিত পদ্ধতিতে জারি করিতে হইবে এবং অন্ততপক্ষে একটি নকল বিরোধের বিষয়বস্তুতে বা উহার নিকটে কোন প্রকাশ্যে স্থানে লটকাইয়া দিয়া জারি করিতে হইবে।

দখল সম্পর্কে ইনকোয়ারি

ঘ) অতঃপর ম্যাজিস্ট্রেট, বিষয়টির ন্যায়-অন্যায় বা বিরোধের বিষয়বস্তুতে উক্ত পক্ষসমূহের কাহারও দখলের অধিকারের দাবির প্রসঙ্গ না তুলিয়া পেশকৃত বিবৃতিসমূহ পাঠ করিবেন, পক্ষসমূহের বক্তব্য শ্রবন করিবেন। তাঁহার যে সাক্ষ্য প্রমাণ হাজির করে তাহা শ্রবণ করিবেন, এইরূপ সাক্ষ্য- প্রমাণের ফলাফল বিবেচনা করিবেন, প্রয়োজন মনে করিলে তিনি অতিরিক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ (যদি থাকে) গ্রহণ করিবেন এবং সম্ভব হইলে উপরোক্ত আদেশের তারিখে কোন পক্ষ বিরোধীয় বিষয়বস্তুতে দখলকার ছিলেন কিনা এবং কোন পক্ষ দখলকার ছিলেন তাহা স্থির করিবেন।

তবে শর্ত থাকে যে, ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট যদি প্রতিয়মান হয় যে, উক্ত আদেশের তারিখের অব্যবহিক পূর্ববর্তী দুই মাসের মধ্যে কোন পক্ষকে বলপূর্বক ও অন্যায়ভাবে বেদখল  করা হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি এইরূপ বেদখল পক্ষকে উক্ত তারিখে দখলকার ছিলেন বলিয়া গণ্য করিতে পারিবেন।

তবে আরও শর্ত থাকে যে, ম্যাজিস্ট্রেট যদি ঘটনাটিতে জরুরী বলিয়া মনে করেন, তাহা হইলে এই ধারা অনুসারে তাঁহার সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে যেকোন সময় এই বিষয়বস্তু ক্রোক করিতে পারেন।

ঙ) এই ধারায় যাই থাকুক না কেন, উক্তরূপে হাজির হইবার নির্দেশপ্রাপ্ত কোন পক্ষ বা অন্য কোন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রমান করিতে পারিবেন যে, উক্তরূপ কোন বিরোধের অস্তিত্ব নাই বা ছিল না এবং এইরূপ ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট তাঁহার পূর্বোক্ত আদেশ  বাতিল করিবেন এবং পরবর্তী সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখিবেন, তবে এইরূপ বাতিলকরণে সাপেক্ষে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক (১) উপধারা অনুসারে প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে।

আইনানুগভাবে উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত দলকারের দখল অব্যাহত

চ) ম্যাজিস্ট্রেট যদি সিদ্ধান্ত করেন যে, পক্ষসমূহের মধ্যে এক পক্ষ বিরোধীয় বিষয়বস্তুতে দখলকার ছিলেন বা (৪০) উপধারার প্রথম শর্ত অনুসারে তাহাকে উক্ত বিষয়বস্তুতে দখলকার বলিয়া গণ্য করা উচিত, তাহা হইলে তিনি একটি আদেশ দ্বারা সেই পক্ষকে আইন অনুসারে যথাযথভাবে উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত দখলের অধিকারী বলিয়া ঘোষনা করিবেন এবং এইরূপ উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত উক্ত দখলের প্রতি সকল বিঘ্ন সৃষ্টি নিষিদ্ধ করিবেন। এবং তিনি যখন (৪) উপধারার প্রথম শর্ত অনুসারে অগ্রসর হন, তখন তিনি বলপূর্বক ও অন্যায়ভাবে বেদখল পক্ষকে দখল প্রত্যর্পণকরিতে পারেন।

ছ) এইরূপ কোন কার্যক্রমের কোন পক্ষ যখন মারা যায় ম্যাজিস্ট্রেট মৃত পক্ষের আইনসঙ্গত প্রতিনিধিকে কার্যক্রমের পক্ষে করাইতে পারিবেন এবং অতঃপর তিনি অনুসন্ধান চালাইয়া যাইবেন এবং মৃত পক্ষের আইনসঙ্গত প্রতিনিধি সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন ওঠে তাহা হইলে মৃত পক্ষের প্রতিনিধি বলিয়া দাবিদার সকল ব্যক্তিকে কার্যক্রমের পক্ষ করিতে হইবে।

জ) ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন যে, এই ধারা অনুসারে তাঁহার বিবেচনাধীন কোন কার্যক্রমের বিষয়বস্তু, কোন সম্পত্তির ফসল বা অন্য কোন উৎপন্ন দ্রব্য দ্রুত ও স্বাভাবিকভাবে ক্ষয়শীল, তাহা হইলে তিনি উক্ত সম্পত্তির যথাযথ হেফাজত বা বিক্রয়ের জন্য আদেশ দিতে পারিবেন এবং অনুসন্ধান সমাপ্ত হইবার পর উক্ত সম্পত্তি বা উহার বিক্রয়

লব্ধ অর্থ বিলিবন্টনের জন্য তিনি যেইরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করেন, সেইরূপ আদেশ দিবেন।

ঝ) ম্যাজিস্ট্রেট উপযুক্ত বলিয়া মনে করিলে এই ধারা অনুসারে পরিচালিত কোন কার্যক্রমের যেকোন পর্যায়ে যেকোন পক্ষের আবেদনক্রমে কোন সাক্ষীকে হাজির হইবার বা কোন দলিল  বা বস্তু হাজির করিবার নির্দেশ দিয়া সমন প্রদান করিতে পারিবেন।

ঞ) এই ধারার কোন বিধান ম্যাজিস্ট্রেটএর ১০৭ ধারা অনুসারে অগ্রসর হইবার ক্ষমতা ব্যাহত করে বলিয়া গণ্য করা যাইবে না।

ধারা ১৪৬ বিরোধের বিষয় ক্রোক করিবার ক্ষমতা    

ক) ম্যাজিস্ট্রেট যদি স্থির করে যে পক্ষ সমূহের কেহই তখন বিরোধীয় বিষয়বস্তুতে দখলকার ছিল না, অথবা তাহাদের মধ্যে কোন পক্ষ তখন উহাতে দখলকার ছিল, সেই সম্পর্কে তিনি যদি নিজে সন্তুষ্ট হইতে অসমর্থন হন তাহা হইলে আদালতে পক্ষসমূহের অধিকার অথবা দখল পাইবার অধিকারী ব্যক্তি সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি উহা ক্রোক করিতে পারিবেন।

তবে শর্ত থাকে যে, মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা ক্রোককারী ম্যাজিস্ট্রেট যদি সন্তুষ্ট হন যে, বিরোধীয় বিষয় সম্পর্কে আর শান্তিভঙ্গের আশংকাই নাই, তাহা হইলে তিনি যেকোন সময় ক্রোক প্রত্যাহার করিতে পারেন।

খ) যখন কোন ম্যাজিস্ট্রেট বিরোধীয় বস্তু ক্রোক করেন তখন, তিনি যদি উপযুক্ত বলিয়া মনে করেন এবং কোন দেওয়ানী আদালত যদি ইতিপূর্বে বিরোধীয় সম্পত্তির কোন রিসিভার নিয়োগ না করিয়া থাকেন তাহা হইলে তিনি উহার জন্য একজন রিসিভার নিয়োগ করিতে পারিবেন এবং ম্যাজিস্ট্রেটের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে উক্ত রিসিভারের দেওয়ানী কার্যবিধি অনুসারে নিযুক্ত রিসিভারের সকল ক্ষমতা থাকিবে।

তবে, কোন দেওয়ানী আদালত যদি পরবর্তী পর্যায়ে উক্ত বিরোধীয় সম্পত্তির কোন রিসিভার নিয়োগ করেন, তাহা হইলে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নিযুক্ত রিসিভার তাঁহার নিকট দখল অর্পণ করিবেন এবং অতঃপর তাঁহাকে দায়িত্ব হইতে অব্যাহিত দেওয়া হইবে। তথ্যসূত্রঃঅনলাইনঢাকা