এজাহার করতে

এজাহার করতে

কোন ব্যক্তি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হোক বা না হোক, দেখা সাক্ষী হোক বা না হোক, কোন আসামী বা সন্দেহজনক ব্যক্তির নাম বলতে পারুক বা না পারুক, তিনি যদি নিশ্চিত হন যে একটি আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তাহলে তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে এজাহার দায়ের করতে পারেন। এজাহার বা প্রাথমিক তথ্য বিররণী (FIR-First Information Report)হচ্ছে অপরাধ সংঘটনের পর পুলিশের কাছে পৌঁছানো সর্বপ্রথম লিখিত বা মৌখিক সংবাদ। এজাহার দেয়া বা এফআইআর করাকেই মামলা করা বলা হয়।

এজাহারের শর্তাবলী

  • এজাহার কোন গুজবের ভিত্তিতে হবে না, সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
  • এজাহার বর্ণিত অপরাধটি আমলযোগ্য হতে হবে।
  • থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তার অনুপস্থিতিতে কোন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদান করতে হবে।
  • সংবাদটি লিপিবদ্ধ করতে হবে।
  • লিপিবদ্ধ করে তা সংবাদদাতাকে পড়ে শোনাতে হবে।
  • এটা সংবাদদাতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে।

এজাহারের বৈশিষ্ট্য

একটি ত্রুটিমুক্ত এজাহারে যেসব তথ্য থাকতে হয়।

—কি দোষ অর্থাৎ অপরাধের প্রকৃতি কি? অপরাধটি কি আঘাত না চুরি না ধর্ষণ। (অপরাধটি যদি সম্পত্তি সংক্রান্ত হয়, চোরাই মালের তালিকা, শনাক্তকরণ চিহ্ন (যদি থাকে) অবশ্যই এজাহারে উল্লেখ করতে হবে)।

—কে করল অর্থাৎ অপরাধীর নাম কি? যদি আসামীর নাম প্রকাশ পায় তাহলে প্রত্যেক আসামীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও অপরাধের বিবরণ উল্লেখ করতে হবে।

—কখন অর্থাৎ কোন তারিখে কোন সময়ে ঘটনা ঘটেছে তার উল্লেখ করতে হবে। (ঘটনার তারিখ, সময় ও দিনের নাম (ইংরেজি ও বাংলায়) উল্লেখ করতে হবে।

—কোথায় অর্থাৎ ঘটনাস্থলের নাম (সম্ভব হলে মৌজার নাম, জেএল নং ও থানা হতে দূরত্ব) এবং দিকের বর্ণনা।

—অপরাধী কিভাবে অপরাধ সংঘটন করল।

—কে বা সহায় অর্থাৎ অপরাধ সংঘটনকালে অন্য কোন অপরাধী তাকে সাহায্য করেছিল কিনা, করে থাকলে তাদের নাম।

এজাহার যারা গ্রহণ করত পারে

সাধারণত থানার ওসি, সেকেন্ড অফিসার বা ডিউটি অফিসার এজাহার বা মামলা গ্রহণ করে থাকেন।

এজাহারে সাক্ষীর গুরুত্ব

এজাহারই হচ্ছে সংঘটিত অপরাধের লিখিত মূল দলিল। এজাহার জিআর মামলার ভিত্তি হলেও সর্বক্ষেত্রে এজাহার বা প্রাথমিক তথ্যবিবরণীকে মৌলিক সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য করা বাঞ্ছনীয় নয়। সাক্ষ্য আইনের ১৫৭ এবং ১৪৫ ধারার বিধানুযায়ী এজাহারকে সাক্ষীর সাক্ষ্যের অসঙ্গতি প্রমাণ করার জন্য অথবা সাক্ষীর সাক্ষ্যের সত্যতা সমর্থনের জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে এজাহারকে মৌলিক সাক্ষ্য হিসেবে গণ্য করা হয় না।তথ্যসূত্রঃঅনলাইনঢাকা