স্পেশাল ব্রাঞ্চ
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ সংক্ষেপে এসবি নামে পরিচিত। ষাটের দশকে ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনের তৎপরতা বৃদ্ধিসহ আন্দোলন পরিস্থিতিতে তৎকালীন সরকার দেশের প্রতিটি জেলায় পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকার মালিবাগে এর সদর দফতর অবস্থিত।
পরবর্তীতে এ সংস্থার উপর আরো কিছু নতুন দায়িত্ব অর্পিত হয়। এসব দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে, আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, ছাত্র তৎপরতা ও শ্রমিক তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করা, রাজনৈতিক সংগঠনসমূহের তৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয় সরকারকে অবহিত করা। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর এ সংস্থাটি আরো সুগঠিত করা হয় এবং ভিআইপি বা রাজকীয় অতিথিদের নিরাপত্তার জন্য এ সংস্থার সাথে যুক্ত করা হয় কিছু সংখ্যক প্রটেকশন ফোর্স। এ ফোর্স বাংলাদেশের প্রত্যেক মহানগর পুলিশ ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রে একজন অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁকে সাহায্য করার জন্য কয়েকজন পুলিশ সুপার ও ডেপুটি পুলিশ সুপার, আর তার দাফতারিক স্টাফ রয়েছেন। রেঞ্জের অধীনস্থ প্রত্যেকটি জেলা সদরে একজন ইন্সপেক্টর এবং তার অধীনে সাব-ইন্সপেক্টর, সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর, হেড কনস্টেবল ও ওয়াচার কনস্টেবল রয়েছেন। জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চের সামগ্রিক দায়িত্ব জেলা পুলিশ সুপারের উপর ন্যস্ত থাকে। তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকার সকল বিষয়ের সংবাদসমূহ কেন্দ্রীয় অফিসে প্রেরণ করেন।
স্পেশাল ব্রাঞ্চের কার্যাবলী
—বিভিন্ন সভা সমিতিতে নেতাদের দেয়া বক্তৃতা রেকর্ড করা এবং আপত্তিকর বক্তব্য প্রদানকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
—রাজনৈতিক ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে দৈনিক প্রতিবেন (DR) সাপ্তাহিক গোপনীয় প্রতিবেদন (WCR) ইত্যাদি তৈরি করে যথা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো।
—বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ড সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই করা এবং সেগুলো লিপিবদ্ধ করা।
—রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকারক কোন কর্মকান্ড ও আইন-শৃঙ্খলা অবনতিকারক কর্মকান্ড সম্পর্কে সংবাদ সংগ্রহ, যাচাই ও প্রয়োজনীয় প্রতি ব্যবস্থার জন্য দ্রুত যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা।
—সরকারী, আধা সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি প্রার্থীদের ভেরিফিকেশন।
—নিরাপত্তা পরীক্ষণ (Security Vetting)।
—দেশী/বিদেশী অতি গুরুত্বপূর্ণ (VVIP) এবং গুরুত্বপূর্ণ (VIP) ব্যক্তিগণের নিরাপত্তা দেয়া।
—কেপিআই ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহের জরিপ, পরিদর্শন এবং সেগুলোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া।
—সীমান্তে উত্তেজনা বিষয় ও উপজাতীয়দের রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কার্যকলাপ ও গতিবিধির উপর গোয়েন্দা নজর রাখা।
—রাজবন্দিদের অন্তরীণ সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা।
—স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া।
—সরকার কর্তৃক অর্পিত অন্যান্য বিভিন্ন দায়িত্ব পালন।