এ মাসেই শেখ হাসিনা-মোদির বৈঠক লন্ডনে
চলতি মাসে (এপ্রিলে) কমনওয়েলথ হেড অব গভর্নমেন্ট মিটিংয়ে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে যাবেন বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ওই সময়ে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি বৈঠক হতে পারে। ভারতের কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ওই সম্মেলনের ফাঁকেই উভয় নেতার বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করা হচ্ছে দুই দেশের পক্ষ থেকে।
ঠিক এক বছর হতে চলল মোদী-হাসিনার শীর্ষ বৈঠক হয়েছে। এর মধ্যে কোনও তৃতীয় দেশেও মুখোমুখি হননি তাঁরা। দু’টি দেশেই নির্বাচন কড়া নাড়ছে। লন্ডনের বৈঠকটি সম্ভব হলে, কূটনৈতিক শিবিরের হিসাব মতো বর্তমান সরকারের আমলে এটাই দু’দেশের শেষ শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হবে। ফলে এই বৈঠকের গুরুত্ব গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই যথেষ্ট। সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বিমস্টেক-এর নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকা গিয়েছিলেন। এর পর যাবেন বিদেশসচিব বিজয় গোখলে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, বাংলাদেশ সরকারের আরও বেশি আস্থা অর্জন করাটাকে এখন অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সাংস্কৃতিক দৌত্যের মাধ্যমে ‘ট্র্যাক টু’ কূটনীতির দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে। ১০ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে একটি আলোচনাসভায় যোগ দিতে ঢাকা যাচ্ছেন রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরি এবং বিশ্বভারতীর উপাচার্য সবুজকলি সেন।
মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, লন্ডনে বৈঠক হলে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে তিস্তা নিয়ে কোনও চূড়ান্ত কথা দেওয়া সম্ভব হবে না মোদির পক্ষে।
সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিস্তা ছাড়াও আরও অনেক দিক রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভারত পাশে রয়েছে। যে কাজগুলো ইতোমধ্যেই চলছে তার পাশাপাশি, নতুন কোন ক্ষেত্রে সমন্বয় বাড়ানো যায়, তা নিয়ে কথা বলবেন মোদি-হাসিনা। কথা হবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়েও। কট্টর মৌলবাদ এবং সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে পারস্পরিক সহযোগিতা আগামি দিনগুলোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে নির্বাচনি সহিংসতার ঘটনা বাড়লে তার প্রভাব সীমান্তে পড়তে পারে—এই উদ্বেগ রয়েছে নয়াদিল্লির।
তবে তিস্তা নিয়ে আশু নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা না থাকলেও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত যে ঐকান্তিক, এবার এই অবস্থান বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরা হবে। রাখাইন প্রদেশকে আর্থসামাজিকভাবে ঢেলে সাজার জন্য কী পদক্ষেপ নিয়ে সুবিধা হয়, সে বিষয়ে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে ভারত। গত বছরের শেষে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলা রাখাইনের উন্নয়নের জন্য একটি চুক্তিপত্রে সই করেছে ভারত। সেখানে প্রস্তাবিত আবাসন তৈরির প্রকল্পগুলো শুরু করে দিতে সক্রিয় হচ্ছে মোদি সরকার। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করার মতো যথেষ্ট রসদ রাখাইন প্রদেশে রয়েছে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।