সংবিধান প্রণেতা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘সরকার সরাসরি মিথ্যাচার করে বলছে, এগুলো গিলে নেন। দেশের মানুষকে ছাগল ভাববেন না।’‘বাংলাদেশ বোকাদের দেশ না।’
শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্য মঞ্চে এক নাগরিক সংলাপে কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। কামাল হোসেনের ৮১ তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের সংবিধানে বিধৃত আকাঙ্ক্ষা, বিদ্যমান পরিস্থিত ও করণীয়’ শীর্ষক এ নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’।
কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকার নিজেদের কায়দামতো তথাকথিত সংসদ, তথাকথিত নির্বাচন, তথাকথিত গণতন্ত্র বানিয়েছে।’। ‘একের পর এক ব্যাংক লুট হচ্ছে। জনগণের কষ্টের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সরকার এসব টাকা ফিরিয়ে আনতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’। ‘এখন এমন এক পরিস্থিতি গুম, হত্যার ভয়ে দেশের জনগণ কথা বলতে ভীত। কিন্তু গুম, হত্যার ভয়ে ভীত থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার এ মাত্র উপায় নাগরিকদের ঐক্য।’
নাগরিক সংলাপে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘সরকার সত্য শুনতে ভয় পায়। তাই বিরোধী কোনো দলকে সভা, সমাবেশের অনুমতি দিতে চায় না।’, “দুর্নীতি দেশকে গ্রাস করেছে। সরকারি কোনো দপ্তরে ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। অথচ মন্ত্রীরা বলেন, এটি নাকি ‘স্পিড মানি’।”
কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিন নেতাকে তুলে নেওয়ার সমালোচনা করে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে, দেশবিরোধী কোনো আন্দোলন ছিল না। তাহলে চোখে বেঁধে তুলে নিয়ে যেতে হবে কেন? এই চোখ বাঁধার সংস্কৃতি শিখেছেন পাকিস্তানের কাছ থেকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা এভাবে চোখ বেঁধে তুলে নিত।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের আদেশ দেয়ায় বিচারকের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই বিচারকের বিচার হবে। ওই টাকা তসরুফ হয়নি। অব্যবহৃত হয়ে পড়ে আছে। খালেদা জিয়াকে এই মামলায় আসামি করা অন্যায়।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মঈনুল হোসেন বলেন, ‘শুধু নির্বাচনের কথা বললে হবে না। স্থায়ী প্রধানমন্ত্রী, স্থায়ী রাজনীতি, স্থায়ী নেতৃত্বের রাজনীতি চলবে না, এটাও বলতে হবে। এগুলো জনগণকে বলতে হবে।’
নাগরিক সংলাপে তেল, গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ অংশ নেন।