জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের বলেছিলাম… তোমরা শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ নাও। শহীদ মিনার হচ্ছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রতীক।
স্বাধীনতা যুদ্ধে লক্ষ্য ছিল বৈষম্যমুক্ত নিজেদের একটি দেশ। জাতীয় স্মৃতিসৌধ হচ্ছে বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের চেতনার প্রতীক। আওয়ামী লীগ দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল, তাদের শোষণ ও নির্যাতনের জন্যই পতন হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের পতন হয়নি। সরকারের পতন হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে। আমরা সব সময় বৈষম্য ও দুর্নীতি এবং দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি।
সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বনানী কার্যালয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল, ছাত্ররা রাজনীতিতে আসতে চায় না। কেউই বুঝতে পারেনি, ছাত্ররা এতটাই রাজনীতি সচেতন। প্রমাণ করেছে, ছাত্ররা আমাদের চেয়ে বেশি রাজনীতি বোঝেন। ছাত্রদের প্রধান শক্তি হচ্ছে একতা আর দ্বিতীয় শক্তি হচ্ছে জনগণের আস্থা। ছাত্রদের প্রতি জনগণের আস্থা ছিল, তারা দেশের জন্যই আন্দোলন করেছে। সেজন্যই ছাত্রদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং ক্ষমতা ও লোভ লালসার বাইরে থাকতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমরা শুরু থেকেই ছাত্রদের ন্যায্য দাবির পক্ষে ছিলাম। কোটা পদ্ধতির বিপক্ষে আমরা সংসদে কথা বলেছি। সংসদের বাইরেও বক্তৃতা ও বিবৃতিতে আমরা বলেছি, চাকরিতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে সংবিধান পরিপন্থি। আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, টাকা পাচার, বৈষম্যের মাধ্যমে জাতিকে বিভাজন করার বিরোধিতা করে আমরা সব সময় কথা বলেছি। সংসদে আমি শেখ হাসিনার সামনেও আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। যখন মানুষের নিরাপত্তা ছিল না… জীবনের নিশ্চয়তা ছিল না, তখনও আমরা সরকারের সমালোচনা করতে পিছপা হইনি। আওয়ামী লীগ আমাদের দলকে নষ্ট করতে চেয়েছে, একই সঙ্গে আমাদের রাজনীতি করতেও বাধা দিয়েছে। দল না থাকলে রাজনীতি থাকে না, আবার রাজনীতি না থাকলে দলও থাকে না। জনগণের পক্ষে রাজনীতি না থাকলেও দল থাকে না। আমাদের রাজনীতির জন্য দলকে স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে। আবার, দলের জন্যও রাজনীতি স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আমাদের দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, সেই ষড়যন্ত্র এখনও চলছে।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় জনগণের সঙ্গেই ছিল। তাই, ৩৪ বছর পরেও জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে টিকে আছে। জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কেউই কিছু চিন্তা করে না। আমরা এখনই নির্বাচন চাই না। কারণ, ভালো নির্বাচন আমরা অতীতে অনেক দেখেছি। ভালো নির্বাচনের পরে ভালো সরকার হয় না। ভালো নির্বাচনের পরে ভালো সরকার দেখতে চাই। যাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে। যারা ব্যক্তিগত ও দলীয় সম্পদ হিসেবে দেশকে ব্যবহার করবে না। সেই রকম সরকারের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে, সেজন্য বর্তমান সরকারকে আমরা সময় দিতেও রাজি আছি।