দেনমোহর সংক্রান্ত কিছু তথ্য
বিয়ের সময় স্ত্রীকে দেনমোহর প্রদান করা স্বামীর ওপর ফরজ আর মোহর পাওয়া স্ত্রীর অধিকার। নারীকে এ অধিকার দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, “তোমরা খুশি মনে স্ত্রীকে মহর পরিশোধ করো।” -সূরা আন নিসা: ৪
তাই অন্যসব অধিকারের মতো স্বামীর কাছে দেনমোহর দাবি করা স্ত্রীর জন্য কোনো দূষণীয় নয়। অনেকেই মনে করেন, দেনমোহরের টাকা স্ত্রীকে দিতে হয় শুধুমাত্র বিয়ের বিচ্ছেদ ঘটলে। এটা অজ্ঞতা ও চরম ভুল ধারণা। বিয়ে বিচ্ছেদ না হলেও দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করা ফরজ।
বাসর রাতে, স্ত্রীর মৃত্যুশয্যা, স্বামীর মৃত্যুশয্যা বা অন্য কোন পরিস্থিতিতে স্ত্রীর কাছ থেকে মোহরের মাফ চেয়ে নেওয়া শরিয়তে গ্রহণযোগ্য নয়। মাফ চেয়ে নিলেও স্ত্রী দাবী করলে স্বামী মোহর দিতে বাধ্য।
সূরা নিসার ২৪ নম্বর আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মোহর হতে হবে বিক্রয়যোগ্য বস্তু বা সম্পদ, যেমন-নগদ অর্থ, স্বর্ণ বা রূপা, স্থাবর সম্পত্তি ইত্যাদি।
নিম্নে দেনমোহর সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য দেয়া হলঃ
(১) চাহিবা মাত্র স্ত্রীকে দেনমোহর প্রদান করতে স্বামী বাধ্য।
(২) দেনমোহর ছাড়া বিয়ে ফাসিদ (ত্রুটিযুক্ত) হিসেবে গণ্য হবে।
(৩) স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করার পূর্বে তালাক হলে দেনমোহর অর্ধেক দিতে হবে।
(৪) স্ত্রীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক করার পূর্বে স্বামী মারা গেলে দেনমোহর পুরোটা দিতে হবে।
(৫) অনির্ধারিত দেনমোহরের ক্ষেত্রে আদালত যে পরিমান দেনমোহর নির্ধারণ করে দিবেন তা দু’পক্ষকে মেনে নিতে হবে।
(৬) স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক দিলেও (তালাক-ই-তাফইজ) দেনমোহরের অধিকার ক্ষুন্ন হবে না।
(৭) একসাথে দেনমোহর পরিশোধ করতে অক্ষম হলে আদালত স্বামীর আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ দিতে পারেন।
(৮) স্ত্রী চাইলে দেনমোহর আংশিক বা পুরোটা মাফ করে দিতে পারেন।
(৯) বিয়েতে উপহার দেয়া সামগ্রী যেমন- গহনা, শাড়ি, কসমেটিকস ইত্যাদি দেনমোহরের অংশ নয়।
(১০) দেনমোহর বাকি রেখে কেউ মারা গেলে বিধবা স্ত্রীর দেনমোহর সম্পূর্ন পরিশোধ করে তারপর মৃতের সম্পত্তি ওয়ারিশদের মধ্যে ভাগ করতে হবে।
(১১)স্বামীর আগে স্ত্রী মারা গেলে, স্ত্রীর ওয়ারিশদের মাঝে দেনমোহর ভাগ করে দিতে হবে। সৌজন্যেঃ ল্যান্ডরেজিস্ট্রেশনবিডি